কুমিল্লার বি-পাড়া ও বুড়িচং উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের মধে সাহেবাবাদ ইউনিয়নের বর্তমান নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ মোস্তফা ছারোয়ার খান চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি পুনরায় প্রার্থিতা চাইবেন। তবে সাধারন মানুষদের মনোভাবটা বদলে গেছে। বিগত দিনে যত কাজ করেছেন তার সবটাই ছিলো স্বচ্ছতায় সরকারী রুটিন ওয়ার্ক। দৃশ্যমান যত উন্নয়ন- তার পুরোটাই দাবীদার মাননীয় সাংসদ। এবার পছন্দের তালিকায় রেখেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির জসিম উদ্দিন নান্নু। আর গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থী খোরশেদ আলম ও জনৈক ব্যবসায়ী আলহাজ্ব দুলাল সরকার। অনেক গুলো পজেটিভ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে বি-পাড়া ৮ টি ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিরবে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। তবে এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের জন্য দলের সিনিয়র নেতা ও নীতি নির্ধারকদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন নিরবে। তবে শেষ অব্দি কার ভাগ্যে নৌকার টিকেট জুটবে- সেটা সময়ের ব্যাপার।
উল্লেখ্য যে, কুমিল্লার বি-পাড়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন সাহেবাবাদ ইউনিয়নের ০৭ নং ওয়ার্ডের ভোটার আলহাজ্ব মোঃ মোস্তফা ছারোয়ার খান। তিনি বলেন, আমার অতীতের পলিটিকেল ক্যারিয়ার ও এলাকার গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করলে আমি ইনশাল্লাহ দল থেকে পুনরায় নমিনেটেড হতে পারবো এবার।
৫৮ বছরের মোঃ মোস্তফা ছারোয়ার খান বেড়ে উঠেছেন তার গ্রামের বাড়িতে। তার বাবা মরহুম মাষ্টার সৈয়দ আহাম্মেদ খান। তিনিও এক সময় এই এলাকার জনপ্রতিনিধি ছিলেন দীর্ঘ ১যুগের ও বেশী। পাশাপাশি আওয়ামী ঘরনার রাজনিতী করতেন। পড়াশোনা করেছেন তার স্থানিয় স্কুলে। পরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ইন্টার পাশ করেন। এরপর গ্রাজুয়েশন করেন দেবিদ্বারের সুজাত আলী ডিগ্রী কলেজ থেকে। সব শেষে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স করেন। ছাত্রবাস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। ৭৬ সালে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদকের মধ্য দিয়ে তার রাজনীতিতে আসা। পরে ৭৮ সালে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময় যুবলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। আর তখন আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। এবং বৃহত্তর সাহেবাবাদ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ১৯৮৮সালে। ১৯৮৯ তে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক টানা তিনবার। ২০১৯ থেকে আজঅব্দি যগ্ম সাধারণ সম্পাদক। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এছাড়া পেশাজীবি সংগঠন-বি-পাড়া শিক্ষক সমিতির, কুমিল্লা বিটিএ সাবেক সহ-সভাপতি, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার, বিট পুলিশিং সার্ভিস সহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত।
বি-পাড়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন বর্তমান। আর এখানকার সাংসদ ছিলেন প্রয়াত আব্দুল মতিন খসরু এমপি। সাংসদের দিক নির্দেশনা ও পৃষ্টপোষকতায় যথেষ্ঠ উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে তার এলাকায়। এখানকার রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো উন্নয়নে যথেষ্ট দৃশ্যমান। সবকটি চেয়ারম্যান সরকার দলীয়। আগামী ইউপি নির্বাচনের বর্তমান চেয়ারম্যান ছাড়াও আরো কয়েকজন দল থেকে নমিনেটেড হতে চাইবেন। এদিকে বর্তমান নব-নির্বাচিত সাংসদ এডভোকেট আবুল হাসেম ও উপজেলার চেয়ারম্যানের দিক নির্দেশনায় আগামী দিনগুলোতে জননেত্রী শেখ হাসিনার আমার গ্রাম-আমার শহর প্রতিপাদ্যকে বাস্তবায়ন করার লক্ষে কাজ করার অভিমত প্রকাশ করেন বর্তমান এই চেয়ারম্যান।
এদিকে সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ইতি মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছেন। মার্চ থেকে শুরু করে জুন মাসের শেষ নাগাদ ধারাবাহিক ভাবে গত বারের মত ৫ ধাপে নির্বাচন শেষ করতে চান স্থানীয় মাঠ প্রশাসন। দেশে বর্তমানে ৪ হাজার ৫৭১ টি ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যমান। ২০১৬ সালে ২২ শে মার্চ শুরু হয়ে ৪ জুন পর্যন্ত কয়েক ধাপে নির্বাচন সমাপ্ত করে সরকার। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুসারে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিন পূর্বে পরবর্তী পরিষদের গ্রহণযোগ্যতা থাকে। আর সেই আলোকে কুমিল্লা ১৭ টি উপজেলার ৩১২ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই কুমিল্লার মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন সি.ই.সি। এর মধ্যে লাকসাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ, মনোহরগঞ্জের ১১ টি ইউনিয়ন, লালমাই উপজেলা ১১ টি , দেবিদ্বারে ১৫ টি, বি-পাড়া ও বুড়িচং এ ১৭টি ও মুরাদনগরের ২২ অন্যতম।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এবার যারা মনোনয়ন প্রত্যাশি সবাই আওয়ামী দলীয় নেতা কর্মী। দীর্ঘ দিন যাবৎ এ এলাকার রাজনীতিবীদ ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে –আ.হ.ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) সাবেক রেল মন্ত্রী এডভোকেট মুজিবুর রহমান। তাদের দিক নির্দেশনায় এবারের নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হবেন। তবে এখানকার বর্তমান এমপি এডভোকেট আবুল হাশেম কাকে রেখে কাকে দলীয় টিকেট দেবেন- তা নিয়ে ঝল্পনা কল্পনার শেষ নেই। ১৭ টি ইউনিয়নের সকল প্রার্থীরাই মনে করেন তারা এমপির পছন্দের মানুষ। এই পছন্দের প্রার্থীতা বাছাই করতে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের কাউন্সিল অধিবেশন কিংবা বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে দলীয় ভাবে নমিনেটেড করলে কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর আগমন ঘটবে না। সবাই তার জন্য এক হয়ে কাজ করবেন। এ বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা ছারোয়ার খান বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবার তেমন কোন সুযোগ নেই। মাননীয় এমপি ও দক্ষিণ জেলার নিতি নির্ধারকগণ যে সিদ্ধান্ত দেবেন বা যাকে দল থেকে নমিনেটেড করবেন, আমরা তার জন্যই কাজ করে যাবো আগামী দিন গুলোতে। এবং নৌকার প্রার্থীকে বিজয় করতে নিশ্চিত করবো। পাশাপশি জননেত্রী শেখ হাসিনার এবারের প্রতিপাদ্য- “আমার গ্রাম-আমার শহর” বাস্তবায়িত করতে আমরা বদ্ধ পরিকর।
তবে সকল প্রার্থীরাই এক বাক্যে বলেন, এখানকার সকল উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দু আমার মাননীয় সাংসদ প্রয়াত এমপি এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু এর দিক নির্দেশনা ও পৃষ্টপোষকতায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখার চেষ্টা করবো। যদি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই পুনরায়- তাহলে স্বচ্ছতার মধ্যেই কাজ করে যাবো জনগণের জন্য।
এদিকে ২০ হাজার ভোটারদের মাঝে ৩০% নবীন এবং তরুণ ভোটাররা আগামীতে মোঃ মোস্তফা ছারোয়ার খান কে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচনে জয়ী করতে তার পিছনে একাট্টা। চেয়ারম্যান বলেন আমি সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে আসছি। আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আর আমার প্রিয় নেতা মাননীয় সাংসদ ও উপজেলার চেয়ারম্যান সহ দক্ষিণ জেলার নিতি-নির্ধাকগণ। তিনি আরো বলেন জীবনে কোনদিন দলের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাজনীতি বাণিজ্য করি নাই। চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি করার প্রিভিয়াস রেকর্ড আমার নেই। এলাকার দরবার-শালিস বিচারে কোন পক্ষপাতিত্ব করি না। আর কোন প্রকার গ্রুপিংয়ের রাজনীতি আমি করি না। কাউকে করতে উৎসাহ দেই না। আমার শুধু একটাই গ্রুপ আর তা হল জননেত্রীর শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির পাশাপশি জনগণের সেবা প্রদান করা।