ক্রমাগত দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারিয়ে বিলীন হচ্ছে বাঙালির প্রাণের সাথে মিশে থাকা নদ-নদীগুলো। যার প্রভাবে ধুকছে প্রকৃতি ও পরিবেশ। সে অবস্থা থেকে নদী রক্ষার পাশাপাশি জনমনে নদীর প্রতি আন্তরিকতা বাড়াতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বর্ণ্যাঢ্য নৌ র্যালী। শনিবার বিকেলে নৌ দিবস উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদীতে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা সংগঠন “তরী’র” উদ্যোগে এই র্যালীর আয়োজন করা হয়। “নদী বাঁচলে, বাঁচবে দেশ” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে শহরের তিতাস নদীর আনন্দ বাজার নৌ-ঘাট থেকে ১০টি নৌকা নিয়ে র্যালীটি নদীর প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। এ সময় নদী রক্ষার বিভিন্ন শ্লোগানে পতাকা আর ব্যানার প্রদর্শন করে সাধারণ জনগনকে সচেতন করা হয়। র্যালীতে কবি-সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহন করে। র্যালীটি দীর্ঘপথ অতিক্রম করার পর ভাদুঘর নৌ ঘাট গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় নদী ভিত্তিক কবিতা নিয়ে নদী বন্দনা।
অংশগ্রহনকারীরা জানান, নদী মাতৃক বাংলাদেশে নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে এখানকার সভ্যতা, বেড়ে উঠেছে অর্থনীতি। এই নদীকে ঘিরেই সাহিত্য আর সংস্কৃতির বয়ে চলা। অথচ আধুনিকতার এ সময় নানাভাবে নদ-নদী ও জলাশয়গুলোর উপর নির্বিচারে অত্যাচার চলছে। যার বিরুপ প্রভাব পড়ছে প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় নদী রক্ষার প্রতি সকলকে আন্তরিক হতে হবে। অন্যথায় নদী মাতৃক এই বাংলাদেশ একদিন মরুভূমিতে পরিণত হবে।
এদিকে নদী রক্ষায় জনগনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোও আরো আন্তরিক হওয়ার দাবী জানিয়ে, নদী ও জলাধার রক্ষা নিয়ে কাজ করা সংগঠনর তরী বাংলাদেশ এর আহŸায়ক বলেন, নদীকে দখল-দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং নদী তীরবর্তী জনসাধারণসহ সকলকে নদীর প্রতি আন্তরিক করতেই এমন আয়োজন করা হয়েছে। কারণ প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদীগুলোকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বিশেষ করে যে নদীকে ধারণ করে বাঙালি সাহিত্য ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধতা তা টিকিয়ে রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব। তিনি আরো বলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নদী রক্ষায় সারাদেশেরই নানামূখী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। এতে আমরা আশাবাদী, আমরা মনে করি সরকারের আন্তরিকতায় দেশের নদীগুলো আবারো আগের চিরচেনা রুপে ফিরবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, নদীকে বাঁচাতে প্রশাসন সব সময়ই তৎপর রয়েছে। নৌ র্যালীর যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীকে নদীকে দখল-দূষণের হাত থেকে রক্ষায় সচেতন করা হয়েছে। বিশেষ করে তিতাস নদীর সাথে জেলাবাসীর এক অন্যরকম হৃদ্যতা রয়েছে। আমরা আশা করি এই নদীটিকে রক্ষায় জেলাবাসীও সচেতন হবে।