ব্রাহ্মণবাড়িয়া অনুকূল আবহাওয়া ও উপযোগী পরিবেশে থাকায় প্রতি বছরই বাড়ছে মাল্টার চাষ। এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে চাষিদের মুখেও হাসি ফুটেছে। চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৭ কোটি টাকার মাল্টা বিক্রি হবে বলে আশাবাদ কৃষি সম্প্রধারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কর্মকর্তাদের। প্রতি বছরই চাষিরা মাল্টার নতুন নতুন বাগান করছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৩৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টার চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হেক্টর, সরাইল উপজেলায় ২ হেক্টর, কসবা উপজেলায় ৩৫ হেক্টর, নবীনগর উপজেলায় ১০ হেক্টর, বাঞ্ছারাপুর উপজেলায় ৫ হেক্টর, নাসিরনগর উপজেলায় ১ হেক্টর, আখাউড়া উপজেলায় ১৫ হেক্টর, আশুগঞ্জ উপজেলায় ১ হেক্টর ও বিজয়নগর উপজেলায় ৬৫ হেক্টও জমিতে মাল্টার চাষ করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোট-বড় মিলিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছে ১ হাজার ৮৮০টি মাল্টার বাগান।এর মধ্যে বিজয়নগর ৭৫৪টি,কসবায় ৬৬০টি ও আখাউড়ায় ৪৬৬টি মাল্টার বাগান রয়েছে।
জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাল্টার চাষের আবাদ শুরু হয়। ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে মাল্টা চাষের আবাদ। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বারি মাল্টা ১ জাতের মাল্টার চাষই বেশি হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় বাণ্যিজিক ভাবে মাল্টার চাষ শুরু হয় ২০১৫ সালে। বর্তমানে উপজেলার পাহাড়পুর, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর ও সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের গ্রামের বাড়ির আঙ্গিনা ও সমতল ভূমিতে মাল্টার বাগান করা হয়েছে। উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭৫৪টি বাগন। বাগনগুলোতে গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ডালে ডালে ঝুলছে সবুজ মাল্টা।
উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের হাটখোলা গ্রামে মাল্টা চাষি সবুজ মিয়া জানান, গত ৪ বছর আগে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ১ বিঘা জমিতে ৬০টি চার লাগিয়ে মাল্টা চাষ শুরু করি। তবে শুরুতে আশানুরুপ ফলন না হলেও এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। কীটনাশক ঔষধ ছাড়ায় বিষমুক্ত গাছে মাল্টার ভালো ফলন হয়েছে। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকার ও দর্শনার্থীরা বাগানে এসে মাল্টা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাগানে থেকে ১০০-১৩০ টাকা কেজি দরে মাল্টা বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের চাষি সোহাগ ভূইয়া জানান,তিনি ৬০শতাংশ জায়গায় মাল্টার বাগান করেছেন। ৫ বছর আগে ৬০টি মাল্টা চারা দিয়ে বাগান শুরু করলেও বর্তমানে তারা বাগানে ১৬০টি মাল্টার চারা রয়েছে। সব গুলো গাছে ভালো ফলন ধরছে। নিয়মিত গাছে পরিচর্যা করছি। ফলন ভালো হওয়ায় লাভে আশা করছি।
বিজয়নগর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার হাদিউল ইসলাম ভূইয়া বলেন,আমার উপজেলা কৃষি সম্প্রসাধণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চাষিদেও সব ধরনে পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি। অল্প খরচে লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই মাল্টা চাষে মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ-পরিচালক রবিউল হক মজুমদার বলেন, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১৩৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টা উৎপাদন হবে। আশা করছি এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৭ কোটি টাকার মাল্টা বিক্রি হবে। তিনি আরো বলেন , আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। মাল্টা চাষ জনপ্রিয় কওে তুলতে বিভিন্ন সময় প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করি।
সাইফুল ইসলাম সুমন,অননিউজ24।।