ব্রিজের মুখে বাঁধ দিয়ে মাছচাষ, জলাবদ্ধতায় দুইশ বিঘা জমিতে চাষাবাদ অনিশ্চিত
বাগমারা, রাজশাহী প্রতিনিধি।।
রাজশাহীর বাগমারায় এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল ক্ষমতার জোরে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের রমজানপাড়া কদমতলা ব্রিজের মুখে বাঁধ দিয়ে মাছচাষ শুরু করেছে। এ কারণে ওই ব্রিজের মুখ দিয়ে স্বাভাবিকভাবে বিলের পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতায় হুমকির মুখে পড়েছে রমজানপাড়া বিলের প্রায় দুইশ বিঘা জমি। এতে ওই বিলের সমস্ত জমিতে ধান, পাট, পানবরজ, মরিজ ও শাক-শবজিসহ বিভিন্ন ধরণের ফসল চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে পানির স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বন্ধ ব্রিজের মুখের সামনে থেকে প্রভাবশালীদের দেওয়া বাঁধ অপসারণের দাবিতে এলাকাবাসীর পক্ষে রমজানপাড়া গ্রামের আবু তালেব নামে এক কৃষক গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছেও দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের রমজানপাড়া বিল সংলগ্ন মাদিলা, মনোপাড়া, রমজানপাড়া ও বোয়ালিয়াসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে প্রায় শতাধিক মৎস্যজীবী পরিবার রয়েছেন। তারা বাব-দাদার আমল থেকেই ওই বিলে স্বাধীনভাবে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়েই পরিবার পরিজন নিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি নরদাশ ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মফিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ওই বিল থেকে গরীব ও অসহায় মৎস্যজীবীদের উচ্ছেদ করে দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছে। শুধু তাই নয় মাছ চাষের সুবিধার জন্য প্রভাবশালীরা ওই বিলের পানি নামার এক মাত্র মাধ্যম কদমতলা ব্রিজের মুখের সামনে মাটি ফেলে বাঁধ দিয়ে স্বাভাবিকভাবে পানি চলাচল ও প্রাকৃতিক মাছ প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। প্রভাবশালীদের হুমকি-ধামকির কারণে ওই বিলে আগের মত এখন আর মাছ ধরতে না পারায় বিল সংলগ্ন এলাকার গরীব ও অসহায় মৎস্যজীবী পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে ওই বিলের সমস্ত জমিতে চাষবাদ অনিশ্চিত হওয়ায় এলাকার কৃষক পরিবারও খাদ্য সংকটে পড়ার আশংকা করছেন।
এ প্রসঙ্গে বাগমারা উপজেলা সহকারি কমিশনার (দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও) সুমন চৌধুরী বলেন, এলাকার মৎস্যজীবীরা যেন আগের মত আবারও স্বাধীনভাবে মাছ ধরতে পারে এবং কৃষকরাও যেন তাদের জমিতে ঠিকমত চাষাবাদ করতে পারে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দুই-এক দিনের মধ্যেই অভিযান চালিয়ে ওই ব্রিজের মুখের সামনে থেকে বাঁধ অপসারণ করে সকলের জন্য উন্মক্ত করে দেওয়া হবে।
এফআর/অননিউজ