দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। দিন ভর খড়া রোদ থাকলেও রাতে বইছে হিমেল হাওয়া। আর এই আবহাওয়া পরিবর্তনে হঠাৎ করে উত্তরের এই জনপদ পঞ্চগড়ে দেখা দেয়া শুরু করেছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। সব থেক বেশী আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের। এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, সারা দিন কড়া রোদ থাকলেও রাতে বইতে থাকে হিমেল হাওয়া। গরমের পর রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা বাড়তে থাকায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে পঞ্চগড়ে করোনা রোগীর পাশাপাশি আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে বয়স্কদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাই কয়েকগুন বেশি। তাই প্রতিদিনেই হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে রোগীর ভীর। কেওবা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছে আবার কেওবা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ বলছে, করোনা রোগীর সংখ্যা কমলেও আবহাওয়ার কারনে সামুয়ীক কিছু ভাইরাজ বাহিত রোগ ছরিয়ে পড়ায় বয়স্ক ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। আর অভিভাবকদের পরামর্শসহ সঠিক সেবা প্রদানে চিকিৎসকরা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
গত ৩ দিন ধরে সরেজমিনে দেখা গেছে, দিনভর গরমের ভাব না কমলেও রাত ও ভোরের সময়ে আবহাওয়া কিছুটা ঠন্ডা থাকে, পঞ্চগড়ের এমনি আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে শীতজনিত কিছু ভাইরাজ ছরিয়ে পড়ছে। এর কারনে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্করাও। মৌসুমি ভাইরাজ বাহিত রোগ ছরিয়ে পড়ায় প্রতিদিনে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ জেলার পাঁচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে জ্বর-সর্দিকাশি, নিমুনিয়া ডাইরিয়াসহ শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা। আর প্রতিদিনে হাসপাতালেও দেখা যায় রোগীদের উপচে পড়া ভীর।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গড়ে প্রতিদিন প্রায় দুই’শ থেকে চার’শ রোগী ছুটে আসছেন চিকিৎসা সেবা নিতে। তবে এসকল রোগীদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। লম্ভা লাইনে দ্বাড়িয়ে শিশু সন্তান নিয়ে অপেক্ষা করছেন মায়েরো। আর রোগীদের ভীরে সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। রোগীদের শাররীক অবস্থা বিবেচনার প্রেক্ষিতে কেওবা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছেন আবার কেওবা জরুরী চিকিৎসা পেতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরছেন।
পঞ্চগড় সদরের জালাশি এলাকার সুরাইয়া বেগম বলেন, গত তিনদিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত দুই বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আছেন। দ্রুত চিকিৎসাসেবা পেতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পঞ্চগড়ের হাড়িভাসা ইউনিয়নের নুরজাহান বেগম বলেন, রাতে কাঁথা গায়ে দিই। কিন্তু দিনে আবার ফ্যান চালাতে হয়। এখন গরম-ঠাণ্ডা নিয়ে সর্দি-জ্বরে ভুগছি।
পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার (শিশুরোগ) ডাঃ রাজ্জাক হোসেন বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণ এবং কোভিডের আতঙ্ক কমে যাওয়ায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে বেশী আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্করা। রোগীদের রোগ মুক্ত থেকে রেহাই পেতে চিকিৎসার পাশাপাশি অভিভাকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডাঃ ফজলুর রহমান বলেন, বর্তমানে করোনা রোগীর সংখ্যা কমলেও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে ভাইরাস বাহিত রোগ ছরিয়ে যাওয়ায় নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। চিকিৎসকরা তাদের সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।