ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহুল আলোচিত ডাক্তার মোহসিন উদ্দিন ফকিরকে অবশেষে মাগুরা জেলা হাসপাতালে বদলী করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে ডিএসএফ ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ, করোনা ভাইরাস কালীন সরকারের অনুদানে নয় ছয়, জখমী সনদ বাণিজ্য অভিযোগ করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরে তদন্ত করেন ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। উল্লেখিত দুর্নীতি ও অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় তাকে গতকাল ২২ নভেম্বর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ পার- ২ শাখায় যুগ্ম সচিব জাকিয়া পারভীনের স্বাক্ষরে তার বদলির আদেশ প্রকাশ হয়।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় সাংবাদিক তার দুর্নীতি ও অনিয়ম ও বেপরোয়া কর্মকাণ্ড সংবাদ প্রকাশ করার কারণে তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেন ডাক্তার মোহসিন ফকির। এরপর থেকেই তাকে নিয়ে ফরিদপুর অঞ্চলের আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। গণমাধ্যমের একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর বিভিন্ন সংস্থা তদন্তে নামে। অভিযোগ রয়েছে, ডাক্তার মোহসিন উদ্দিন ফকির ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত থেকে প্রায় কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় এক ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনকে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ আছে, বিভিন্ন সময়ে ভাঙ্গা উপজেলাবাসীর সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করার অভিযোগ রয়েছে। তার বদলির খবর শোনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মিষ্টি বিতরণ করছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকে একের পর এক নানা অনিয়মে জড়িয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন ডা. মোহসিন উদ্দিন ফকির । বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দিয়ে নির্দিষ্ট প্যাথলজিতে যেতে বাধ্য করার মত গুরুতর অভিযোগ ছিল সব সময়। এছাড়াও হাসপাতালের অভ্যন্তরে ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করতো এই ডাক্তার। এমনকি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের শেল্টার দিয়ে আসছিলো। জরুরী বিভাগের অভ্যন্তরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচারণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা গরিব অসহায় মানুষের পকেট কেটে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার স্বপ্ন এই ডাক্তারকে অষ্টেপৃষ্ঠে ধরে। দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন স্থানীয় একটি পত্রিকা ও কয়েকটি অনলাইন ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যায় অনিয়মের লাগাম টানতে স্বাস্থ্য বিভাগ এ সিন্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে সুত্র জানায়।
স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি তার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করি এরপর আমার বিরুদ্ধে নাটক সাজিয়ে একটি আইসিটি আইনে মামলা দায়ের করেন ডাঃ মোহসিন উদ্দিন ফকির । আমি বিজ্ঞ আদালতে ন্যায়বিচার পাবো। এ বিষয়ে ডাক্তার মোহসিন উদ্দিন ফকিরের সাথে যোগাযোগ করেও মোবাইলে পাওয়া যায়নি।