ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সারা দেশের ন্যায় খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। দীর্ঘদিন পর সেই , সেই চক ডাস্টারের গন্ধ, সেই চেয়ার টেবিল, লম্বা করিডোর, যেন অনেকদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোতে ফিরে এসেছে প্রানচাঞ্চল্য। দীর্ঘ্য প্রতিক্ষার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এলাকায় বইছে উৎসবের আমেজ।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে প্রায় সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ ১৮ মাস অর্থাৎ ৫৪৩ দিন বন্ধ থাকার পর আবারও সচল হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট দেখা দেয়। অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে দুরে গিয়ে কেউ চলে যায় নেশায় আসক্ত হয়ে অন্য জগতে প্রবেশ করে। কেউ বেছে নেয় রোজগারের পথ।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৪৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল কামিল মাদ্রাসা খুলেছে। শিক্ষার্থীদের কলকাকলীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গনগুলো মুখরিত হয়ে উঠেছে। কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে যেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রান ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হওয়ায় নানা ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে উপজেলার স্কুল-কলেজগুলো।অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের বরণ করতে নানা আয়োজন করেন।কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে রীতিমতো উৎসবের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সব ফটক বেলুন ও কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে। তিন ফুট দূরত্ব রেখে শিক্ষকরা গেটের সামনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে শিক্ষাথীদের প্রবেশকালে শিক্ষকরা করতালি ও ড্রাম বাজিয়ে সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়।
উপজেলার মালীগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ক্লাসরুম সাজানো হয়েছে বেলুন ও রঙিন কাগজ দিয়ে। নিজেদের চেনা ক্যা¤পাসে শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনা জানানো হয় চকলেট ও ফুল দিয়ে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, সব ধরনের প্রস্তুতির পাশাপাশি রাখা হয়েছে আইসোলেশন সুবিধাসহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা পদক্ষেপ।এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার খবরে শিক্ষা সরঞ্জাম কেনার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক পোশাক (স্কুল ড্রেস) বানাতে ব্যসÍ সময় পার করেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। দীর্ঘ সময় পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যেতে নির্দিষ্ট পোশাক নিয়ে স্কুলগুলোতে তেমন কড়াকড়ি থাকবে না জানালেন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধানগন।
মালীগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেজবাহ উদ্দিন অননিউজকে জানান, শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। আশা করি প্রতিষ্ঠানটিতে আবার প্রানচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুন্সী রুহুল আসলাম বলেন, সারা দেশের ন্যায় উপজেলায় ১২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কলকাকলেিত মুখর হয়ে উঠেছ্। স্বাস্থ্য বিধি মেনে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস চালুসহ সকল প্রস্তুতি শেষে পুরোদমে চলছে এর কার্যক্রম।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24