ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সম্পা বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার রাতে পৌরসভার আতাদী মধ্যপাড়া গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে শুক্রবার সকালে মরদেহর ময়না তদন্তর জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয় । ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধুর স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় গৃহবধুর ছোট ভাই রনি বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
মৃত সম্পা পৌরসভার নওয়াপাড়া ভারইডাঙ্গা গ্রামের সোরহাব মাতুব্বরের মেয়ে ও আতাদী মধ্যপাড়া গ্রামের কামরুল মাতুব্বরের স্ত্রী।
মৃত সম্পার ছোট ছেলে রিফাত (১২) জানায়, দুপুরে খাবার খেয়ে বাড়ির বাইরে খেলতে যায় সে। সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে মাকে ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢুকে। ঘরটির মধ্যে অন্ধকারা”ছন্ন থাকায় মায়ের ঝুলন্ত পায়ের সাথে রিফাতের ধাক্কা লাগে। এসময় ঘরের আড়ার সঙ্গে তার মা সম্পাকে গলায় রশি পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে সে চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানান, রিফাতের চিৎকার শুনে তারা এগিয়ে আসে। এসময় সম্পাকে তার শোবার ঘরের বারান্দার আড়া সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বা¯’্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক সম্পাকে মৃত ঘোষনা করেন। তারা আরও জানায়, প্রায়ই তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হত। পারিবারিক কলোহের জেরেই অবুজ দুটি সন্তান তারা তাদের মা কে হারালো!
সম্পার আপন ছোট ভাই রনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, বৃহষ্পতিবার দুপুরে তার বোন ফোনে বলছিল তোরা আমাকে এসে নিয়ে যা। আমাকে বাচা, কিন্তু সম্পাকে আর বাচাঁনো গেল না। সম্পার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন তার বোন জামাই কামরুলের প্রতিবেশী এক ভাস্তির সঙ্গে দির্ঘদীন যাবত পরোকিয়া সম্পর্ক চলছিল। পরোকিয়া বিষয়টি নিয়ে ইতোপূর্বে ¯’ানীয় কয়েকবার ভাবে শালিস হয়েছিল। কিন্তু গোপনে সেই পরকিয়া সম্পর্ক চলছিল বিধায় প্রায়ই তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হত। পরকিয়ার জের ধরেই কামরুল সম্পাকে হত্যা করে তার লাশ আড়ায় ঝুলিয়ে রেখে পালিয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।
এ ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ শহিদুল্লাহ জানান, ঘটনার পর থেকে সম্পার স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনকে তাদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি। বৃহষ্পতিবার রাতে সম্পার মরদেহ তার শশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। আজ শুক্রবার সকালে মরদেহর ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী জানান, সম্পার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার বিসয় আইনী প্রকৃয়া অব্যাহত রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।