পূর্বের বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আস ঢলে তৃতীয় দফা বন্যার কবলে জুড়ীবাসী। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৩২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। ৪০ হেক্টর কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন কৃষকরা।
গতকাল বুধবার উপজেলার ফুলতলা, সাগরনাল ও জায়ফরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, টানা তিনদিনের বর্ষণ ও উজান (ভারতের ত্রিপুরার ধর্মনগর ও কৈলাশহর) থেকে নেমে আসা ঢলে আকস্মিক বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন বন্যা আক্রান্ত লোকজন। বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন অনেকে। বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ করছে।
ফুলতলা ইউনিয়নের কোনাগাওঁ গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাড়ির উঠোন ও ঘরের একাংশ পানিতে ডুবে গিয়েছে। পরিবারের লোকজন নিয়ে ঘরের শুকনো অংশে কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছি। পানি বাড়তে থাকলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
সাগরনাল ইউনিয়নের পাতিলাসাংগন গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মুহিত মুতলিব জানান, এক সপ্তাহ পূর্বে ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলাম, বন্যায় তলিয়ে গিয়েছে। আমাদের এলাকার প্রায় সব কৃষকদের একই অবস্থা। এবার ধান ঘরে তোলার আশা ছেড়ে দিয়েছি।
বন্যায় জুড়ী-বিটুলী আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ওই এলাকার অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। জুড়ী-লাটিটিলা সড়কের বিস্তর এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলার পূর্বাঞ্চলের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর জানান, উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ৪০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৬৩৯০ টি পরিবারের প্রায় ৩২ হাজার লোক পানিবন্দি অবস্থায় আছে। এখন পর্যন্ত ২৮ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৩ টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
মনিরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24