ভুল চিকিৎসার বিচার দাবিতে ময়মনসিংহে দৃষ্টি হারানো নারী চিকিৎসকের সংবাদ সম্মেলন
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ঢাকাস্থ দীন মোহাম্মদ চক্ষু হাসপাতালের রেটিনা বিশেষজ্ঞ ডা. দীপক কুমার নাগের অপচিকিৎসায় দৃষ্টি হারানোর বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগি চিকিৎসক।
বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভুক্তভোগীও নিজেও একজন চিকিৎসক। তাঁর নাম ডা: মাহজাবিন হক মাশা। মাহজাবিন হকের বাবার নাম আমিনুল হক শামীম। তিনি এফসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার যুগ্ম মহাসচিব এবং ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ডা: মাহজাবিন হক জানান, গত ১ জুন দীন মোহাম্মদ চক্ষু হাসপাতালে দেশের বিশিষ্ট রেটিনা বিশেষজ্ঞ দীপক কুমার নাগের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দীপক কুমার নাগ মাহজাবিনের চোখ পরীক্ষা করে খুব দ্রæত দুই চোখেই লেজার অপারেশন করতে বলেন এবং ৫ জুনের মধ্যে লেজার অপারেশন না করা হলে যে কোন সময় অন্ধ হওয়ার আশংকার কথা জানান। তাই মাহজাবিনে পরিবারের লোকজন দেশে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অপটিমলোজি অ্যান্ড হসপিটাল (এনআইওএইচ) যোগাযোগ করে। পরে এনআইওএইচ এ ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয় মাহজাবিনের চেখের চিকিৎসার জন্য। বোর্ড গঠনের কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন দীপক কুমার নাগ। দীপক কুমার নাগ ওই বোর্ডে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ওই দিনই অপারেশন করতে বলেন। পরে ডা: দীপক কুমার নাগের কথায় রাজি হয়ে তার কাছে অপারেশন করার মাহাজাবিন। কিন্তু পরে তার চোখে নানা জটিলতা দেখা দেয়।
পরবর্তীতে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতলে চোখের উন্নত চিকিৎসা করান মাহজাবিন। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, দীপক কুমার নাগের চিকিৎসাটি ভুল ছিল। ডা. দীপক কুমার নাগ লেজার অপারেশনের মাধ্যমে তাঁর ৩৩% দৃষ্টি শক্তি স্থায়ীভাবে নষ্ট করে দিয়েছেন।
মেহজাবিন হক আরো অভিযোগ করেন, মেডিকেল বোর্ড গঠন করার কারনে অথবা অন্য কোন ক্ষোভের কারনে দীপক কুমার নাগ এমন অপচিকিৎসা করেছেন। এ ঘটনায় গত আগস্ট মাসে ময়মনসিংহে আদালতে দীপক কুমার নাগের বিরুদ্ধে মামলা করেন মাহজাবিন হক। বর্তমানে দীপক কুমার নাগ এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে দাবী করেন, পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ও চিকিৎসার ইচ্ছা থাকা সত্বেও কেবল একজন চিকিৎসকের অপচিকিৎসার জন্য আমাকে আংশিক অন্ধত্ব বরণ করতে হল। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক বিচার চাই। যেন দেশে এমন অপচিকিৎসার শিকার আর কেউ না হন। ঐ ডাক্তারকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ছাড়াও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কালামসহ সাংবাদিক ছাড়াও ময়মনসিংহের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতি, ধর্মীয় সংগঠন নেতারা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।