কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রীদের গুলিতে আহত পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক বুধবার সকাল ৯টার সময় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে।
গত বুধবার (২ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে উপজেলা শহরের গোডাউন মোড় এলাকায় সন্ত্রীদের গুলিতে আহত হয় পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক। ৮দিন মৃত্যুর সাথে পাজ্ঞা লড়ে বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল ৯টার সময় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বেলাল হোসেন ও শ্যামল নামে আরও দুজন। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া জেলা জাতীয় যুবজোটের (জাসদ) ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শোভনকে আটক করেছে পুলিশ। ভেড়ামারা শহরের চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভেড়ামারা-কুষ্টিয়া, ভেড়ামারা- দৌলতপুর ও ভেড়ামারা-পাবনা মহাসড়ক এই রির্পোট লেখা পর্ষন্ত অবরোধ করে রেখেছে। স্কুল ও কলেজসহ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ এবং বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা।
নিহত সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও পৌর এলাকার দুলাল চন্দ্র প্রামানিকের ছেলে।
ভেড়ামারা থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহŸায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামানিক (৩৫) দলীয় কর্মকাÐ শেষ করে শহরের গোডাউন মোড় এলাকায় তার বাড়িতে ফিরছিলেন। বাসায় ঢোকার সময় আগে থেকে সেখানে কুষ্টিয়া জেলা জাতীয় যুবজোটের (জাসদ) ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শোভনের নেতৃত্বে অবস্থান করা ২০ থেকে ২৫ জনের সন্ত্রাসীদল সঞ্জয় প্রামানিককে লক্ষ্য করে গুলি করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ঘটনার সময় সঙ্গে থাকা রিপন হোসেন ও শ্যামল সরদার নামে দুই কর্মী বাঁধা দিতে গেলে তাদের কেউ আহত করা হয়। এতে সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের পায়ে ও হাঁটুর নিচে গুলি লাগে। এছাড়াও তার মাথায় ও শরীরে কুপিয়ে জখম করা হয়। আহতদের শরীরে জখমের চিহ্ন আছে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সঞ্জয়সহ তিনজনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আহত সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে। ৮দিন মৃত্যুর সাথে পাজ্ঞা লড়ে বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল ৯টার সময় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে।
হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময়স্কুল ও কলেজসহ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধসহ বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।
ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমুল ইসলাম ছানা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও হত্যাকারিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহŸায়ক সোলাইমান হোসেন বলেন, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া মোস্তাফিজুর রহমান শোভন একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। সে এ পর্যন্ত বহুজনকে আহত করেছে। আগামী দুর্গাপূজা উদ্ধসঢ়;যাপনে মেলার মাঠ দখল নিতে হিন্দু স¤প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালায় এই শোভন ও তার ক্যাডার বাহিনী। আমাদের দলের নেতা সঞ্জয় প্রামানিক এর প্রতিবাদ করে। এই আক্রোশে সঞ্জয় প্রামাণিককে গুলি করে হত্যা করে। অস্ত্র উদ্ধারসহ সব আসামিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি। এর ব্যত্যয় হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম জহির বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই মূলত এ ঘটনা। আহত পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক বুধবার সকাল ৯টার সময় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। তবে অপরাধী যেই হোক আইনের আওতায় আনা হবে। মুস্তাফিজুর রহমান শোভন কে আটক করা করেছে।
এফআর/অননিউজ