কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা শহরের স্থানীয় বাসষ্ট্যান্ডে রোববার বিকাল ৬ টার সময় বৃষ্টির মধ্যে ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের খুনিদের ফাঁসি দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আসামি সন্ত্রাসী মোস্তাফিজুর রহমান শোভন ও তার ক্যাডার বাহিনীসহ ইন্ধনদাতাদের বিচার না করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব রফিকুল আলম চুনু, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান মিঠু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আলহাজ্ব শামিমুল ইসলাম ছানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব আলম বিশ্বাস, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের স্ত্রী বীথি রানী দে, ছোট ভাই সম্পদ কুমার প্রামাণিক, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মানিক মিয়া, উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক সোলাইমান হোসেন প্রমুখ।
বক্তরা বলেন, যে অস্ত্র দিয়ে সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকে হত্যা করেছে, সেই অস্ত্র উদ্ধার দেখতে চাই। সন্ত্রাসী মোস্তাফিজুর রহমান শোভন ও তার ক্যাডার বাহিনীকে যারা আশ্রয় বা প্রশ্রয় দিবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও হত্যাকারিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি না হলে আগামীতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। হামলার নেতৃত্ব দেওয়া মোস্তাফিজুর রহমান শোভন একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। আগামী দুর্গাপূজা উদ্যাপনে মেলার মাঠ দখল নিতে হিন্দু স¤প্রদায়ের বাড়িতে হামলা চালায় এই শোভন ও তার ক্যাডার বাহিনী। অস্ত্র উদ্ধারসহ সব আসামিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি। এর ব্যত্যয় হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। সঞ্জয়ের খুনিদের দ্রæত গ্রেফতার করে ফাঁসি দাবী করে।
পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের স্ত্রী বীথি রানী দে বলেন, ‘আমার স্বামী তো কারও কোনো ক্ষতি করে নাই। তাঁকে তো সবাই ভালোবাসতেন। তারপরও কেন আমার স্বামীর সঙ্গে এমনটা করল। কেন এমন হইল। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। এই হত্যাকাÐে জড়িত শোভন, ইয়ামিন, প্রত্যাশাদের বিচার চাই। তাদের যেন কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি হয়। আমার জীবন থেকে যা চলে গেছে, তাদের জীবন থেকে যেন সবকিছু হারায়।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে ভেড়ামারা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহŸায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামানিক (৩৫) দলীয় কর্মকাÐ শেষ করে শহরের গোডাউন মোড় এলাকায় তার বাড়িতে ফিরছিলেন। বাসায় ঢোকার সময় আগে থেকে সেখানে কুষ্টিয়া জেলা জাতীয় যুবজোটের (জাসদ) ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শোভনের নেতৃত্বে অবস্থান করা ২০ থেকে ২৫ জনের সন্ত্রাসীদল সঞ্জয় প্রামানিককে লক্ষ্য করে গুলি করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ঘটনার সময় সঙ্গে থাকা রিপন হোসেন ও শ্যামল সরদার নামে দুই কর্মী বাঁধা দিতে গেলে তাদের কেউ আহত করা হয়। এতে সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের পায়ে ও হাঁটুর নিচে গুলি লাগে। এছাড়াও তার মাথায় ও শরীরে কুপিয়ে জখম করা হয়। আহতদের শরীরে জখমের চিহ্ন আছে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সঞ্জয়সহ তিনজনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আহত সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে। ৮দিন মৃত্যুর সাথে পাজ্ঞা লড়ে বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল ৯টার সময় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংবাদ ভেড়ামারায় ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপজেলা আওয়ামীগের অফিসের পাশে ডাকবাংলার সামনে জড়ো হয়। বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এফআর/অননিউজ