কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নে বাঁশেরদিয়াড় গ্রামে যৌতুকের কারণে স্বামী জাহাঙ্গীর আলমসহ তার পরিবার কর্তৃক গৃহবধু শামীমা খাতুনকে রক্তাক্ত জখম করেছে। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় গৃহবধুকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
এই ব্যাপারে কুষ্টিয়া বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে যৌতুক লোভী স্বামী বাঁশের দিয়াড় গ্রামের মৃত ইলিয়াস আলী ওরফে জানু বিশ^াসের ছেলে জাহাঙ্গীর আলী ওরফে জাহাঙ্গীর আলম তার শ^াশুড়ী শাহারা বেগম, ননদ সাগরী খাতুন ও দেবর আলম আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। শামীম খাতুন ওরফে শামীমা আক্তারসহ তার ছেলে ও মেয়ে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন যাপন করছে। সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট সুষ্ঠ তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন শামীমা খাতুনের পরিবার।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা শহরে ফারাকপুর এলাকার অবসর প্রাপ্ত সেনাবাহিনী কর্মকর্তা আব্দুস সবুরের মেয়ে শামীমা খাতুন ওরফে শামীমা আক্তারের সাথে গত ০৩/০৩/২০০৩ইং তারিখে ৫২ হাজার টাকা দেলমোহর ধার্য্যে মুসলিম শরীয়ত মোতাবেক উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বাঁশেরদিয়াড় গ্রামের মৃত ইলিয়াস আলী ওরফে জানু বিশ^াসের ছেলে জাহাঙ্গীর আলী ওরফে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে বিবাহ হয়। তাদের ঘরের মেহেদী হাসান বাপ্পি ও ফাতেমাতুজ জহুরা জন্ম গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে প্রথমের দিকে সুখেই কাটছিলো। যৌতুক লোভী জাহাঙ্গীর আলী তার স্ত্রী শামীমা খাতুনের পরিবারের কাছে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। যৌতুকের কারণে প্রায় শামীমা খাতুনকে
শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে শামীমা খাতুনের পিতা ২ লক্ষ টাকা যৌতুক প্রদান করেন। যৌতুকের টাকা নিয়ে জাহাঙ্গীর আলী (কুয়েত) বিদেশ গমন করেন। কুয়েত যাওয়ার পর থেকে জাহাঙ্গীর আলী তার স্ত্রী ও সন্তানদের খোরপোষ ও ভরণ পোষন দেই না। জাহাঙ্গীর আলী বিদেশে যাওয়ার পর থেকে স্ত্রীর নিকট টাকা না পাঠিয়ে তার মায়ের নিকট টাকা পাঠাই। গৃহবধু মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে সকল অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করে। গত ০২/০৯/২০২২ইং তারিখে গৃহবধুকে মারধর করে জাহাঙ্গীর আলীর পরিবার বাড়ি থেকে বের করে দেয়। শামীমা খাতুন গত ০৭/০৯/২০২২ইং তারিখে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ২২০/২০২২। শামীমা আক্তার সন্তানদের নিয়ে স্বামীর বাড়িতে নিরাপত্তা সহিত বসবাস করার আদেশ পান। কোটের আদেশ পেয়ে শামীমা খাতুন সন্তানদের নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। গত ১৭/০৬/২০২৩ ইং তারিখে যৌতুক লোভী স্বামী জাহাঙ্গীর আলী বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরে আসে। জাহাঙ্গীর আলী বাড়ি ফিরে আসার পর আবার ২ লক্ষ টাকা শামীমা খাতুনের পরিবারের নিকট যৌতুক দাবী করে। দাবীকৃত টাকা না দিলে তার সাথে ঘর সংসার করবেনা বলে জানান।
যৌতুক লোভী স্বামী জাহাঙ্গীর আলী টাকা না পেয়ে রাগান্বিত হয়ে গত ০৮/০৭/২০২৩ ইং স্ত্রী শামীমা খাতুনকে বটি দিয়ে কোপ মেরে রক্তাক্ত জখম করে। শামীমা খাতুনকে স্বামী, ননদ, দেবর এলোপাতাড়ি ভাবে তার শরীলে আঘাত করে। শামীম খাতুনের আত্ম চিৎকারের এলাকাবাসি ছুটে আসলে তারা পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় শামীমা খাতুন কে উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শামীম খাতুন ওরফে শামীমা আক্তারসহ তার ছেলে ও মেয়ে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন যাপন করছে। সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট সুষ্ঠ তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন শামীমা খাতুনের পরিবার।
এফআর/অননিউজ