কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল এলাকার মোসলেমপুর, টিকটিকি পাড়া ও মুন্সিপাড়ায় পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর থেকে মুন্সীপাড়া পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকার ভাঙনে ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এখন বাড়িঘর ভাঙনে হুমকির মধ্যে। ভাঙন থেকে মাত্র দুইশত মিটার দূরে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ৬ হাজার পরিবারের বাড়িঘর। এদিকে রোববার ও সোমবার ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল ভাঙনকবলিত এলাকায় পদ্মা পাড়ে মানববন্ধন করেছে হাজারো নারী, পুরুষ,বৃদ্ধ ও যুবক ও শিশুসহ সর্বস্তরের এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে স্থানীয়রা বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে প্রথম দফায় নদীর পানি বেড়ে যায়। ফলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে গেছে। ইতিপূর্বে আউশ ধান, কলা, পেঁয়াজ, রসুন, করলাসহ সবজির মাঠ নদীতে ভেঙে গেছে। এক সপ্তাহের ভাঙনে ১০০ একর জমি নদীতে পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এর আগেও ভেঙেছে। এখন বাড়িঘর ভাঙনের মুখে। নদী এখন দুই শত মিটার দুরে রয়েছে। রোধ করা না হলে সব নদী গর্ভে চলে যাব আমরা ভিটা ছাড়া হব। তাই ভাঙন রোধে দ্রæত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল আলিম স্বপন। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র আনোয়ারুল কবির টুটুল, উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক এসএম আনসার আলী, পৌর জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বকুল, ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান, ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন, সফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
স্থানীয় বক্তারি বলেন, প্রতিবছরই নদীতে চলে যাচ্ছে ফসলি জামি। এবার বসত বাড়ির নিকট চলে এসেছে। ৬ হাজার পরিবার এখন হুমকির মুখে।
প্রধান অতিথি আব্দুল আলিম স্বপন বলেন, ভাঙনের বিষয়টি আমাদের সংসদ সদস্য ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি মহোদয়কে জানিয়েছি। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছেন। এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী পরিদর্শন করে সার্ভে করে গেছেন। আমি ভাঙন রোধে আন্দোলনকারীর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। পদ্মা থেকে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান। জাসদ অতীতের মতোই ভুক্তভোগী ও অসহায় মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তাদের পাশে থাকবো।
বাহিরচর ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান বলেন, গত সাত দিন ধরে ভেড়ামারার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকা থেকে শুরু করে টিকটিকি পাড়া ও মুন্সি পাড়া পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার জুড়ে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। তবে গত তিন দিনে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ পরিবারের প্রায় ৫শত একর জমি ভাঙনে নদীর বুকে চলে গেছে। গত সাত দিনে ১০০ একর জমির আউশ ধান, কলা, পেঁয়াজ, রসুন করোলা সবজিসহ ফসলি জমি নদীতে ভেঙে গেছে।
ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন বলেন, ভাঙনে এখন মোসলেমপুর, টিকটিকি পাড়া ও মুন্সিপাড়ার ৬ কিলোমিটারের মধ্যে ৬ হাজার পরিবার বসবাস করছে। এসব পরিবারের বাড়ি ঘর ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বাড়ি-ঘর থেকে মাত্র ২০০ মিটার দুরে রয়েছে নদী। ভাঙনে শহিদুল মন্ডলের ২ বিঘা, হাবিবুর রহমানের ৩ বিঘা, আবু বক্করের ৫ বিঘা মজিবর প্রামাণিকের ২ বিঘাসহ ২শ মানুষের জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।’
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সার্ভে করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়াও ভাঙন কবলিত এলাকা নিয়ে স্টাডি চলছে।
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com