ভেড়ামারায় ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামের আত্মহত্যা প্ররোচণায় থানায় মামলা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
দুইজন ব্যবসায়ী ৩০ লাখ টাকা না দিয়ে ষড়যন্ত্র করার কারণে অধৈর্য হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার পাথর ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম (৫৮) মৃত্যুর পূর্বে চিরকুটে একথা লিখে তিনি তার মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে গেছেন।
এঘটনায় নিহতের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন বাদি হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচণার অভিযোগে আঃ সালাম ও মনিরুজ্জামানকে মনির আসামি করে ভেড়ামারা থানায় অভিযোগ দিলে শুক্রবার মামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শহরের নওদাপাড়ার বাড়ি থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে ভেড়ামারা শহরের নওদাপাড়ার (প্রাক্তন সজনী সিনেমা হল) পিছনে মৃত নবী শেখ ফোরম্যানের মেজ ছেলে।
সিরাজুল ইসলাম চিরকুটে লিখেছেন, আমার মৃত্যুর জন্য দুই ব্যক্তি দায়ী তাদের নাম ঠিকানা দেওয়া হলো, ভেড়ামারা কাস্টমস অফিসের পাশে বামন পাড়ার মৃত ছবেদ মেম্বারের ছেলে আঃ সালাম ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জরে বাবুপুরের মনিরুজ্জামান মনির। চিরকুটে এ দুজনের মোবাইল নম্বর উল্লেখ রয়েছে।
তিনি লিখেছেন, আঃ সালাম ও মনির আমার সঙ্গে পাথরের ব্যবসার পার্টনার ছিল। আঃ সালামের কাছে আমার ৩০ লক্ষ টাকার উপরে পাওনা আছে। এই টাকা না দেওয়ার জন্য মনির ও সালাম এক হয়ে আমার বিপক্ষে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এই ষড়যন্ত্রের কারণে অধৈর্য হয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিলাম। নিচে তার নামের স্বাক্ষর ও ৮ ডিসেম্বর তারিখ উল্লেখ রয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানাগেছে, নিহত পাথার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ইতিপূর্বে লোহার ওয়ার্কশপের দোকান ছিলো। সে ব্যবসা ছেড়ে পাথরের ব্যবসা শুরু করেন। তার ঘরের ডাবের সাথে কাপড় পেচানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার আত্মহত্যার কি কারণ তার লেখা তিনটি চিরকুট পুলিশ জব্দ করে। পরে মরদেহ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত সিরাজুল ইসলামের ছোট ভাই রশিদুল ইসলাম বলেন, আমার মেজ ভাই ভেড়ামারার আঃ ছালাম ও চাপাইনবাবগঞ্জ মনিরের সাথে পার্টনারে পাথরের ব্যবসা করতেন। আমার ভাই চিঠিতে মৃত্যুর কারণ লিখে গেছে। মরদেহর বুক পকেটে একটি বিছানার ওপর ও নিচ থেকে আরও দুটি মোট তিনটি একই লেখার চিরকুট পেয়েছি। চিরকুটগুলো মরদেহ উদ্ধারের সময় পুলিশ জব্দ করেছে।
এবিষয়ে ব্যবসায়ীক লেনদেন অস্বীকার করে আঃ সালাম বলেন, সিরাজুল আমার ব্যবসায়ীক পার্টনার নয়। সে আমার কাছে কোন টাকাও পাবে না। তিনি কেন চিঠিতে আমার নাম উল্লেখ করলেন বোধগম্য হচ্ছে না।
অপরজন মনিরুজ্জামান মনির মোবাইল ফোনে বলেন, মৃত্যুর আগের দিন আমার সাথে সিরাজুলের কথা হয়। তিনি জানান একটি দোকান বিক্রি করে আবার ব্যবসা শুর করবেন। আমার কাছে তার টাকা পাওনা নেই। আমি প্রায় এককোটি টাকা তার কাছ থেকে পাবো। আমার কাছে সে ডকুমেন্টস রয়েছে। বরঞ্চ তার মৃত্যুতে আমিই ক্ষতিগ্রস্থ হলাম।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মজিবুর রহমান বলেন, এঘটনায় নিহতের কাছে ও বাড়ি থেকে ৩ টি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন বাদি হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচণার অভিযোগে আঃ সালাম ও মনিরুজ্জামান মনিরকে বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানায় অভিযোগ দিলে মামলা হয়েছে।