কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের বিলশুকা গ্রামে দানেজ আলী (৫৬) নামে এক মৎস্য চাষিকে তাঁর প্রতিবেশী প্রতিপক্ষরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর বিলশুকা ভবানীপুর মাঠপাড়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দানেজের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় জিয়াউল ইসলাম জিয়া (৪০)সহ লিপন প্রামানিক (৩২), রবিউল ইসলাম রবুল (৪৩), শাহিন প্রামানিক (৩৬), সুজন প্রামানিক (৩৮),শ্যামল প্রামানিক (২৮), আছান প্রামানিক (৪৮), শিমুল প্রামানিক (২৬), সাগর( ২৫), সুলতান (৩২)। ১০ জনকে আসামি করে গত শুক্রবার রাতে ভেড়ামারা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, বিলশুকা ভবানীপুর গ্রামে জমি ও মাছ চাষ কেন্দ্র করে দানেজ আলীর সঙ্গে প্রতিপক্ষ প্রতিবেশী জিয়াউল ইসলাম জিয়া ও তার লোকজনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ইতিপূর্বে কয়েক দফা হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটেছে। এরই জের ধরে দানেজ আলী বিলশুকা ভবানীপুর মাঠপাড়া গমের জমি দেখতে গেলে জিয়াউল ইসলাম জিয়া লোকজন নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
স্থানীয় লোকজন হামলাকারীদের মাঠের দিকে যেতে দেখে স্বজনদের খবর দেয়। স্বজনেরা ঘটনা স্থলে গিয়ে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে গত শুক্রবার রাতেই তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় তিনি মারা যান।
নিহতের ভাই আকুব্বার হোসেন বলেন, মাঠে একা পেয়ে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি জিয়া তার লোকজন মিলে লোহার রড ও হাতুড়ি, রামদা-হাসুয়া দিয়ে পিটিয়ে মাথা ও শরীর, দুই হাত-পা থেঁতলে দেয়। এ সময় তাকে কোপানো হয়। নিহতের ছেলে উজ্জল বলেন, আসামিরা খুবই বেপরোয়া। বিভিন্ন সময় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় তারা অবস্থান নেয়। একারণে এদের বিরুদ্ধে কেউ টুঁ শব্দটিও করতে পারে না। প্রধান আসামি জিয়ার বিরুদ্ধে মাদকসহ নানা অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হোক। আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।
ভেড়ামারা থানার এসআই পার্থ বলেন, নিহতের ছেলে উজ্জ্বল মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রকাশ রায় বলেন, হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিজুর রহমান বলেন, দানেজকে গুরুত্বর আহতের ঘটনায় রাতেই মামলা নেওয়া হয়। পরদিন সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে নিহতের ছেলে উজ্জল বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে। প্রধান আসামি জিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আয়েশা আক্তার/অননিউজ24