নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের প্রচারের সময় আচরণবিধি ভঙ্গ (নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম) করায় দায়ে কুমিল্লা-৬ (সদর ও সিটি কর্পোরেশন) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তিনি জরিমানার টাকা ভোটের আগেই জমা দেন। এখন ভোটের পর জরিমানা আইন বর্হিভূত দাবি করে টাকা ফেরত পেতে হাইকোর্টে রিট করেছেন তিনি।
ইসির জরিমানা আরোপের ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে গতকাল সোমবার (২২ জানুয়ারী) রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাহাউদ্দিনকে এক লাখ টাকা জরিমানা আরোপে ইসির সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রুল দেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, কুমিল্লার বিভাগীয় কমিশনারসহ (রিটার্নিং কর্মকর্তা) বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা যায়। কিন্তু ইসি যেভাবে বাহাউদ্দিনকে জরিমানা আরোপ করেছে, তা আইনসিদ্ধ হয়নি। তাই ওই টাকা ফেরত দিতে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হলে শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই রুল দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন যে চিঠি দিয়েছেন তাতে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে ( যদিও আমি আচরণ বিধি লঙ্ঘন করিনি) প্রার্থীতা বাতিলের কথা উল্লেখ করে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। এ বিষয়ে ২৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে হাজির হয়ে তাদেরকে ব্যাখ্যা দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন প্রার্থীতা বাতিলের কথা উল্লেখ করলেও যে ১ লাখ টাকা জরিমান করেছেন তা বিধি বর্হিভূতভাবে। এতে আমার মর্যাদায়ও আঘাত হেনেছে। বিধি বর্হিভূতভাবে করা জরিমানার টাকা ফেরত পেতে আদালতে সরাপন্ন হয়েছি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ৫ম বারের মতো কুমিল্লা-৬ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি। তাঁর বিরুদ্ধে ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ সংঘটনের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে উলেখ করে গত ২৭ ডিসেম্বর এক লাখ টাকা জরিমানা করে ইসি। তিন কার্যদিবসের মধ্যে ওই অর্থ ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে তাঁকে জমা দিতে বলা হয়। বাহাউদ্দিন ওই অর্থ গত ৩১ ডিসেম্বর জমা দেন। তবে ভোটের আগে তাঁকে এক লাখ টাকা জরিমানা করায় ইসির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে এবং জমা দেওয়া টাকা ফেরত দিতে নির্দেশনা চেয়ে ১৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন বাহাউদ্দিন বাহার। আদালতে বাহাউদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা যায়। কিন্তু ইসি যেভাবে বাহাউদ্দিনকে জরিমানা আরোপ করেছে, তা আইনসিদ্ধ হয়নি। তাই ওই টাকা ফেরত দিতে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হলে শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই রুল দেন।
উল্লেখ্য,গত ৭ জানুয়ারির ভোটে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ২১০ ভোট। অপরদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি ঈগল প্রতীকের আঞ্জুম সুলতানা সীমা পেয়েছেন মাত্র ৪৪ হাজার ৯৬৬ ভোট।