নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, তার কমিশন সংসদ সচিবালয়ে একটি চিঠি দিয়ে আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবৈধ প্রভাব বিস্তার না করার জন্য বলেছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
সাবেক এ ইসি সচিব বলেন, রাজনৈতিক দলের এমপি-মন্ত্রী যেই হোক না কেন অবৈধ প্রেসার দিলে তা আমলে না নেওয়ার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব প্রার্থী আমাদের কাছে সমান। কে কার আত্মীয়; মন্ত্রী-এমপিদের কোনো প্রার্থী থাকলে তা আইনে নিষেধাজ্ঞা নেই। কোনো প্রার্থী যেই হোক না কেন, সব প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ করতে হবে। আর কোনো প্রার্থী যদি আচরণবিধি না মানে বা অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কমিশন ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিবকে একটি চিঠি দেবে। স্পিকারের দৃষ্টিতে আনবে। আমরা কী ধরনের নির্বাচন চাই সেটা ওখানে থাকবে। চিঠিও সম্ভবত চলে গেছে। বার্তাটা হলো মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজন প্রার্থী থাকতে পারে, কিন্তু কোনো অবৈধ প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না।
ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে মো. আলমগীর বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। উৎসবমুখর। আইন-শৃঙ্খলা কোনো থ্রেড নেই, সমস্যা নেই। গোয়েন্দা রিপোর্টেও কোনো থ্রেড নেই বলেছে। যেহেতু কয়েক ধাপে ভোট হচ্ছে, তাই ফোর্স বেশি দেওয়া সম্ভব হবে। জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে বেশি ফোর্স মোতায়েন করা হবে। এছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্ষমতা দেওয়াই থাকে, প্রয়োজন হলে তিনি অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করতে পারবেন।
ইসি সচিব বলেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ আসে এটা প্রমাণের প্রয়োজন নেই। যেকোনো প্রার্থী যদি বলে উনি অমুকের আত্মীয় বা ওই পক্ষের হয়ে কাজ করেছেন, তাহলে প্রমাণ ছাড়াই নিয়োগ বাতিল করা হবে। শুধু শুধু কারও প্রতি অভিযোগ আসবে না। এক্ষেত্রে আমাদের প্যানেল থেকে অন্য একজনকে নিয়োগ দেবো। প্যানেলে যোগ্য লোক না পেলে প্রয়োজনে পাশের জেলা বা উপজেলা থেকে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হবে। এটা ট্রেনিং শুরু হওয়ার আগেই করতে হবে। আমাদের প্রিসাইডিং অফিসারের অভাব নেই। তবে কোনো প্রার্থী তালিকা দিলে সেটাও নেওয়া যাবে না। পক্ষপাতমূলক আচরণ করলে রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলে প্রমাণ দিতে হবে। যেহেতু রিটার্নিং অফিসার আমাদের অত নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠের প্রস্তুতি সবাই ভালো বলেছে। সংসদ নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদেরই ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা কোনো চাপ পাচ্ছেন না। তাদের বলা হয়েছে, প্রেসার দিলে সে যেই হোক না কেন, তা আমলে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো প্রার্থী নির্বাচনে থাকবে কী, থাকবে না তা সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিষয়। নির্বাচন কমিশন যেটা দেখবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার যোগ্য কিনা। অনেক প্রার্থী, এমনকি অনেক দল অংশ না নিলে স্থানীয়ভাবে অনেক দলের প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
এবার ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টি উপজেলায় চার ধাপে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। ১৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের সময় হয়নি। পরে সে-সব পরিষদে ভোট নেওয়া হবে।
তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ৮ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১টি ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।
সূত্র : একুশে টেলিভিশন
এফআর/অননিউজ