আর কয়েকদিন বাদেই পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। আপনজনের সাথে উৎসব কাটাতে ইতিমধ্যে অনেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন। আজ সোমবার (৮ এপ্রিল) ঈদ যাত্রার মহাসড়কগুলোতে গাড়ির চাপ থাকলেও কোনো যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। এতে স্বস্তিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ যাত্রা করছে ঘরমুখো মানুষ।
এদিকে, অন্যান্য বছরের তুলনায় ট্রেন যাত্রাতেও ভোগান্তি কমেছে অনেকটাই। ৫ থেকে দশ মিনিট ব্যতিত এখন পর্যন্ত বিরাট সময়ের ট্রেন বিলম্বের খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, এবার লঞ্চে যাত্রীর চাপ বাড়লেও, এখন পর্যন্ত ভোগান্তির খবর পাওয়া যায়নি।
আজ সোমবার সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি।
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চিত্র এচবার একেবারেই পাল্টে গেছে। এই রুটের যাত্রীরা বেশ স্বস্তিতে ঘরে ফিরছেন। অন্যতম ভোগান্তির জায়গা চন্দ্রা মোড়ে গাড়ির চাপ ব্যাপকহারে বেড়েছে, কিন্তু একেবারেই যানজট নেই।
পরিবহন চালকরা বলছেন, ঈদযাত্রায় চন্দ্রা মোড়ে যানজট নেই, এটা বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। তবে, অন্য সময়ের চেয়ে এবার গাড়ির চাপ বেশি বলে মনে হচ্ছে। প্রতিটি মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের সরব উপস্থিতির কারণে এখানে পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক দেখেছি।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব বলেন, চন্দ্রা কেন্দ্রিক মহাসড়কে তিন শিফটে ৫৯৭ জন পুলিশ ও থানা পুলিশসহ এক হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। চন্দ্রার কয়েক কিলোমিটার সড়কে বিশেষ কারণ ছাড়া কোনো যানবাহনকে দাঁড়াতে দেয়া হচ্ছে না। গাবতলী, আশুলিয়া, বাইপাইল, সাভার ও নবীনগর এলাকা থেকে আসা বাস চন্দ্রা এলাকা পাড় হয়ে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে ভোগান্তি ছাড়াই চলে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২৪ হাজার ৭১০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানা যায়, এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটারের দুই লেনের সড়ক নিয়ে সবার দুশ্চিন্তা থাকলেও এতে যান চলাচলে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি।
যাত্রীরা বলেন, টাঙ্গাইল অংশের মহাসড়কে কোথাও কোনো যানজট পাইনি। চিরচেনা মহাসড়ক এবার ঈদযাত্রায় স্বস্তি দিয়েছে। তবে আরও দুইদিন বাকি রয়েছে ঈদের।
মহাসড়কের যে অবস্থা তাতে যানজট হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম বরেও আশা প্রকাশ করেন তারা।
বগুড়াগামী এক বাস চালক বলেন, ঈদের আগে এই সময় মহাসড়কে ব্যাপক যানজট থাকতো। কিন্তু সড়ক উন্নয়ন আর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এবার যানজটমুক্ত। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। স্বাভাবিক গতিতেই গাড়ি চালাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর আশরাফ বলেন, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত কোথাও কোনো পরিবহনের চাপ নেই। স্বাভাবিক গতিতেই পরিবহনগুলো চলাচল করছে মহাসড়কে। পরিবহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে।
এদিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও কোনো ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক রুটের যাত্রীরাও।
অন্যদিকে, রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীচাপ বেড়েছে। তবে ভোগান্তি ছাড়াই গন্তব্যে রওনা হতে পেরে খুশি অধিকাংশ ট্রেনের যাত্রীরা। জানা যায়, এদিন নকশিকাঁথাসহ দুয়েকটি ট্রেন ছাড়া প্রায় সব ট্রেনই সময়মতো ছেড়ে গেছে। এছাড়া, নৌপথে ঈদযাত্রার শুরুর দিকে যাত্রী না থাকলেও, এখন কিছুটা বেড়েছে। সকালের দিকে গ্রিনলাইন পরিবহন ৬শ যাত্রী নিয়ে ভোলার ইলিশার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। চাঁদপুরসহ কাছাকাছি বিভিন্ন নৌরুটের লঞ্চগুলোও যাত্রী নিয়ে ছেড়েছে। দুপুরের পর থেকে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, হুলারহাট, বরগুনা, রাঙ্গাবালী, চরমন্তাজ রুটের লঞ্চগুলো টার্মিনালে আসার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা লঞ্চে উঠে পড়েছেন। সব লঞ্চ নির্দিষ্ট সময়ে ঘাট ছেড়েছে। লঞ্চ মালিকরা বলছেন, চাপ বাড়লে প্রয়োজনে লঞ্চ বাড়ানো হচ্ছে।
সূত্র : একুশে টেলিভিশন
এফআর/অননিউজ