স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন,মাদক অপরাধের শাস্তি হয় মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের প্রকৃতি ও মাদকের পরিমাণের উপর।
সোমবার (০১ জুলাই) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট অধিবেশনে এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথ্য জানান। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী মাদক অপরাধের শাস্তি হয় মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের প্রকৃতি ও মাদকের পরিমাণের উপর। মাদকের ধ্বংসাত্মক প্রবণতা বিবেচনায় এ আইনের তফশিলে ক, খ ও গ এই তিন শ্রেণির মাদকদ্রব্য রয়েছে।
তিনি আরও বলেন,'ক' শ্রেণির মাদকের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেবন, প্রয়োগ ও ব্যবহার ব্যতীত এই শ্রেণির মাদকে অন্যূন ১ বছর কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেবন, প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে অন্যূন৩ (তিন) মাস কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
'খ' শ্রেণির মাদকের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) বছর কারাদন্ড ও অর্থদন্ড এবং অন্যূন ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেবন, প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই শ্রেণির মাদকে অন্যূন ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
'গ' শ্রেণির মাদকের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং অন্যূন ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেবন, প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই শ্রেণির মাদকে অনূর্ধ্ব ১ (এক) বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়াও মাদকদ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি রাখার অপরাধে অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) বছর কারাদন্ড ও অর্থদণ্ড, গৃহ অথবা যানবাহন ইত্যাদি ব্যবহার করতে দেওয়ার অপরাধেঅনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
অর্থ যোগানদাতা, পৃষ্ঠপোষকতা, মদদদাতা এবং মাদক অপরাধ সংগঠনে প্ররোচণাকারীর জন্য সংশ্লিষ্ট অপরাধের নির্ধারিত দন্ডের অনুরূপ দণ্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন,(খ) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর বিধান মোতাবেক মাদক অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাজা প্রদানের পাশাপাশি জরিমানা প্রদানেরও বিধান রয়েছে। জরিমানা প্রদানের পরিমাণও নির্ভর করে মাদক অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য মাদকের পরিমাণের উপর। আর এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞ বিচারকগণ তাঁদের স্বীয় এখতিয়ার অনুযায়ী জরিমানা প্রদান করে থাকেন।
উল্লেখ্য, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর ৫৭ ধারার বিধান অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমেও দোষ স্বীকারের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক শাস্তি প্রদান করার বিধান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ ২ (দুই) বছর সে অপরাধের বিচারই ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক আরোপিত হয়। এক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণও কম হতে পারে।
একটি মাদক অপরাধের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন,কেউ যদি ২ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় তবে তার জরিমানা খুবই সামান্য হতে পারে।
মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম(এমপি)যে লিখিত যে প্রশ্ন করছেন-(ক) মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে বিদ্যমান শাস্তির বিধান কী; জরিমানার পরিমাণ কত; এবং (খ) লক্ষ্য করা যাইতেছে কতিপয় ক্ষেত্রে নাম সর্বস্ব জরিমানা আদায় করিয়া অপরাধীকে ছাড়িয়া দেওয়া হয়; এই ধারা বাতিল করা হইবে কিনা; না হইলে, তাহার কারণ কী?
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24