জয়পুরহাটে কওমি মাদরাসার শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের স্থান হিসেবে শনাক্ত শহরের সুইপার পট্টির রেললাইনের পাশে গড়ে তোলা কথিত বাগানবাড়িকে ঘিরে নানা রহস্য দেখা দেওয়ায় এলাকাবাসীরা গুড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জয়পুরহাটের পৌর শহরের বিশ্বাসপাড়া মহল্লার শেষ মাথায় অবস্থিত হযরত ফাতেমা (রা:) কওমি হাফেজিয়া বালিকা মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে গত রোববার ধর্ষণের ঘটনার স্থান হিসেবে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে কথিত ওই বাগানবাড়িতে। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আজিজুল হক ফেন্সি শহরের ডাকবাংলার পশ্চিম পাশে সুইপার কলোনির পাশে রেললাইন সংলগ্ন ২০ শতাংশ জমি ২০১২ লিজ নেয় রেলওয়ের নিকট থেকে। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে কথিত বাগানবাড়ি। পুরো বাগানবাড়ি জুড়ে ঝোপ ঝাড় আর জঙ্গল। সেখানে বিরাজ করে একটা ভুতুড়ে পরিবেশ। দক্ষিণ পাশে এক কোনে রয়েছে বাঁশের টুকরো অংশ দিয়ে বেড়া দেওয়া একটা দরজা। প্রায় দিন ওই দরজা খুলে বোরকা পড়া অবস্থায় কিছু লোকজন নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখেন এলাকাবাসী। পাশের দোকানি উত্তম মালাকার, অশোক, জাহাঙ্গীর আলম জানান, কথিত ওই বাগানবাড়িতে নানা অপকর্মের অভিযোগ তাদের কানে আসে। কেউ কিছু বলার সাহস পায়না। এলাকাবাসী অপকর্মের কথিত ওই বাগানবাড়ি গুড়িয়ে দেবার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, জয়পুরহাট জেলা শহরের বিশ্বাসপাড়া শেষ মাথায় হযরত ফাতেমা (র:) কওমি হাফেজিয়া মহিলা মাদরাসাতে ধামুইরহাট উপজেলার এক অসহায় শিক্ষার্থী চতুর্থ শ্রেণিতে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মতো পড়াশোনা করে আসছে । ঈদের ছুটি হলেও মাদরাসাতে বেতন বাঁকি থাকায় ওই শিক্ষার্থীকে ছুটি দেওয়া হয়নি মর্মে এজাহারে উল্লেখ করেন মামলার বাদী পিতা শাহ আলম । ওই শিশু শিক্ষার্থীকে কৌশলে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে ওই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আজিজুল হক ফেন্সির বিরুদ্ধে। রোববার মেয়েটি সুকৌশলে পালিয়ে মাদ্রাসার পাশে এক বান্ধবীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ধর্ষনের শিকার ওই শিক্ষার্থী তার সব ঘটনা খুলে বলেন বান্ধবীর পিতা জাকির হোসেনকে । বান্ধবীর পিতা তাৎক্ষণিক ওই ছাত্রীকে জয়পুরহাট সদর থানায় নিয়ে যায়। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ মাছুয়া বাজারের ফেন্সি নামে ফলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আজিজুলকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে সে জেলহাজতে রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়পুরহাট থানার উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন জানান, আজিজুল হক ফেন্সিকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হলেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো আমলে নিয়ে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ধর্ষণের স্বীকার মেয়েটির বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে জয়পুরহাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত রোববারই একটি মামলা দায়ের (নং ৩০, তারিখ ২৩ জুন,২০২৪) করেন । ধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদ ও অভিযুক্ত ধর্ষক আজিজুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ২৬ জুন (বুধবার) সকাল ১০ টায় শহরের পাচুঁরমোড়ে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে জয়পুরহাটের নারী সংগঠন গুলো।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24