নড়াইল শহরের ভিতর দিয়ে সড়ক প্রশস্তশরণ প্রকল্পের আওতায় মার্কেট না ভেঙ্গে সড়ক প্রশস্তকরণের দাবি জানিয়েছেন শহরের চার শতাধিক ব্যবসায়ী।
রোববার (২১এপ্রিল) দুপুরে এসব ব্যবসায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর কাছে এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানিয়েছেন। এসময় ব্যবসায়ী ও পৌরপরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, ব্যবসায়ী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, ব্যবসায়ী নেতা গিয়াস উদ্দিন খান ডালু, নড়াইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ হাসানুজ্জামান, নড়াইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী জহিরুল হক, পৌর কাউন্সিলর রেজাউল বিশ্বাস প্রমুখ। তারা নড়াইল রাসেল ব্রীজ থেকে রূপগঞ্জ বাসষ্টান্ড পর্যন্ত কোথাও ৫২, কোথাও ৬০ বা ৮০ ফুট না করে সব জায়গায় ৫২ ফুট চওড়া রাস্তার দাবি জানান।
ব্যবসায়ী নেতারা দাবি করেন, মার্কেট ভাঙ্গলে কোটি কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। তাছাড়া সড়ক বিভাগ রাস্তার দু’পাশে তাদের বলে যে দাবি করছে তা সঠিক নয়। পৌর মার্কেটের মালিক নড়াইল পৌরসভা। এ জায়গা নিয়ে সড়ক বিভাগের সাথে নড়াইল পৌরসভার নি¤œ আদালতে মামলা হলেও সড়ক বিভাগ আইনী লড়াইয়ে হেরে যায়। এখন সড়ক বিভাগ জোর করে মার্কেট ভেঙ্গে রাস্তা প্রসস্ত করার চেষ্টা করছে।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় মহাসড়কের অংশ হিসেবে শহরতলি মালিবাগ মোড় থেকে শহরের ভীতর দিয়ে সীতারামপুর পর্যন্ত ৫.৫০ কিঃমিঃ নড়াইল শহরাংশের সড়ক প্রশস্তকরণ ও ৪ লেনে উন্নীতকরণ” শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কারনে কোথাও ৫৪ ফুট, কোথাও ৬০ ফুট আবার কোথাও ৮০ ফুট সড়ক প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইতিপূর্বে জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের ৫.৫০ কিঃমিঃ সড়কের আলাদাতপুর মসজিদ থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত ১ কিঃমিঃ সড়ক নড়াইল-মাগুরা আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৮ ফুটে প্রশস্তকরন করা হলেও শহরের প্রাণ কেন্দ্র রুপগঞ্জ এলাকায় ৮০ ফুট করার চেষ্টা চলছে। ফলে নিজস্ব জায়গার ওপর গড়ে ওঠা নড়াইল প্রেসক্লাব, নড়াইল পৌর মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি মার্কেট ভাঙ্গার নির্দেশ হয়েছে। এতে কয়েক’শ ব্যবসায়ী পড়েছেন বিপাকে । এখন তারা কোথায় যাবেন এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। এমন অসাম্যজ্ঞস্য সড়ক প্রশস্তকরনে ক্ষোভ বিরাজ করছে নড়াইলবাসীর মধ্যে।
১শ ৭৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং সড়ক বিভাগের পক্ষে কাজটি তদারকি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ২০২৪ সালের জুন মাস নাগাদ কাজটি সম্পন্ন হবার কথা।
এ বিষয়ে নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, নিয়য়েম মধ্য থেকেই রাস্তা প্রশস্তশরণ প্রকল্পের কাজ চলছে।
নড়াইল পৌর মেয়র আনজুমান আরা বলেন, শহরের মধ্য দিয়ে সড়ক প্রশস্তশরণ প্রকল্পে কোথাও ৬০ ফুট, কোথাও ৬৫ ফুট আবার কোথাও ৮০ ফুট করা হচ্ছে। এটা না করে ৫০ থেকে ৬০ ফুটের মধ্যে করলে ভালো হতো। এতে পৌর মার্কেটসহ অনেক মার্কেট ও দোকান রক্ষা পেতো। ব্যবসায়ীদের ক্ষতিও কম হতো। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়টি পূর্ণবিবেচনার দাবি জানান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে দু’এক দিনের মধ্যে সড়ক বিভাগ, সেনা বাহিনী, পৌর কর্তৃপক্ষ, ব্যবসায়ী এবং নড়াইল প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ নিয়ে বসার কথা বলেন।
এফআর/অননিউজ