মাস্ক পরায় বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে উত্তর কোরিয়া। একই সঙ্গে অন্যান্য বিধিনিষেধও শিথিল করা হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শনিবার (১৩ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। মাত্র কয়েকদিন আগেই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার ঘোষণা দেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।
এর আগে চলতি সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া অভিযোগ করে যে, দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জন্য সিউল দায়ী। সে সময় দক্ষিণ কোরিয়াকে এ জন্য সতর্কও করা হয়।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়া সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশে যে স্বাস্থ্য সঙ্কট তৈরি হয়েছিল তা সম্পূর্ণরূপে নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়েছে এবং পুরো দেশকে স্বল্প সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাস মুক্ত একটি পরিচ্ছন্ন অঞ্চলে পরিণত করা গেছে। এ কারণেই ভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সম্মুখ অঞ্চল এবং সীমান্তরেখার বিভিন্ন শহর এবং কাউন্টি ছাড়া পুরো দেশে মাস্ক পরার ওপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুরো দেশকে মহামারিমুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
গত মে মাসে উত্তর কোরিয়ায় প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। সে সময় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১৬৮ ও একজনের মৃত্যু হয়। এরপরই দেশটিতে দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তবে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পরই লকডাউন ঘোষণা করা হয় সেখানে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। কিন্ত চীনের প্রতিবেশী হওয়ার পরও প্রথম দুই বছরের বেশি সময় ধরে উত্তর কোরিয়া তাদের দেশে করোনার অস্তিত্ব নেই বলেই দাবি করেছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকেই দেশটির সীমান্ত বন্ধ ছিল।
বাইরের কোনো দেশ থেকে ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকৃতি জানানো উত্তর কোরিয়ায় একজন লোকও ভ্যাকসিন নিতে পারেননি। এদিকে করোনাকে জয় করার ঘোষণা দেওয়ার পর সীমান্তবর্তী অঞ্চল ছাড়া দেশের সর্বত্র সামাজিক দূরত্ব এবং অন্যান্য বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
তবে শ্বাসযন্ত্রের কোনো ধরনের সংক্রমণ দেখা দিলে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে উত্তর কোরিয়ায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পেছনে দক্ষিণ কোরিয়াকে দায়ী করে কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন কিমের বোন কিম ইয়ো জং। তিনি জানিয়েছেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের সময় তার ভাই মাত্রাতিরিক্ত জ্বরে ভুগেছেন।
উত্তর কোরিয়ায় প্রায় ৪৮ লাখ মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানানো হলেও এদের মধ্যে কতজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার সঠিক হিসাব প্রকাশ করা হয়নি। দেশটিতে ৭৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।