মা-ছেলে খুনের ঘটনায় ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার চার

সোনাগাজীত (ফেনী) প্রতিনিধি।।
ফেনীর সোনাগাজীতে সোমবার মা-ছেলে খুনের ঘটনায় রাতেই ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন নিহত হাজেরা খাতুনের মা জাহানারা বেগম। মামলার আসামিরা হলেন, চরডুব্বা গ্রামের নূরনবীর ছেলে নিহত হাজেরার স্বামী মো. সোহেল, তার ভাই মো. সাইফুল, দিদার, শাশুড়ি কমলা বেগম, জা নাজমা আক্তার ও নয়ন সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন। রাতেই ফেনী ও বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নিহত হাজেরার দেবর সাইফুল ইসলাম, ভাসুর দিদার, স্বামীর বন্ধু চরলামছি গ্রামের সৈয়দের রহমানের ছেলে নূরুল আফছার এবং স্বামীর ভগ্নিপতি ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের সাড়াশিয়া গ্রামের মৃত আবদুল ওহাবের ছেলে মো. হানিফ। পুলিশ মঙ্গলবার দৃপুরে গ্রেফতারকৃতদের পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে মা-ছেলের ময়না তদন্ত শেষে বিকালে ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের ওলিপুর গ্রামে হাজেরার পিতার বাড়ির কবরাস্থানে মা-ছেলেকে দাফন করা হয়েছে।
জাহানারা বেগম মামলায় উল্লেখ করেন, ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের ওলিপুর গ্রামের মৃত ছেরাজুল হকের কন্যা হাজেরা খাতুন মনির সঙ্গে আট বছর পূর্বে সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের উত্তর চরডুব্বা গ্রামের মৃত নূরনবীর ছেলে মোহাম্মদ সোহেলের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। একজনের বয়স পাঁচ বছর ও অন্যজনের বয়স একবছর। সোহেল পেশায় একজন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক। গত কিছু দিনপূর্বে সোহেল এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে প্রতি শতক জমি এক লাখ টাকা মূল্যে মোট দশ শতক জমি দশ লাখ টাকায় কেনার জন্য বায়নাপত্র করেন। নিজের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া তিন শতক জমি তার দুই সহোদরের কাছে বিক্রি করে দেন। তার স্ত্রী হাজেরা জমি কেনায় রাজি ছিলেননা। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী, দেবর, ভাসুর ও শাশুড়ির মধ্যে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। সোহেল জমি কেনার জন্য তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চেয়ে বিশ হাজার টাকা ধারও এনেছেন। জমি কেনাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে মোহাম্মদ সোহেল সহ আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তার নাতি এমরান হোসেন ইয়ামিন (৫) শ্বাসরোধ করে এবং কন্যা হাজেরা খাতুন মনি (২৪) কে দুই হাতের রগ কেটে, পেটে ছুরি মেরে হত্যা করে নিজ ঘরে রশি দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। অপর এক বছর বয়সী হাজেরার শিশুপুত্র ইরাফান হোসেন আরাফাতকেও হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে আসামিরা। সোমবার সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারটার মধ্যে আসামিরা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। দুপুরে খবর পেয়ে পুলিশ মা-ছেলের লাশ উদ্ধার করে। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান বলেন, বাকী আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এসকেডি/অননিউজ

আরো দেখুনঃ