পিরামিড, নীলনদ আর ক্রুসেডার বিজয়ী সালাউদ্দিন আইয়ুবির দেশ মিশরে অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে একবছরের জন্য শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য এই সুবিধা দিয়েছিল দেশটির সরকার। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আবারও দুই বছরের জন্য চুক্তিটি নবায়ন করতে মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধপত্র পাঠান বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম। সম্প্রতি মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া সরকারি পরিপত্রে (১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ স্বারক নাম্বার ৯) কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানানো হয় যে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গত বছরে করা শর্তসাপেক্ষে অন-অ্যারাইভাল ভিসার চুক্তিটি বলবৎ থাকবে।
গত এপ্রিলে (২০২২) বাংলাদেশি সাধারণ পাসপোর্টধারীদের জন্য শর্তসাপেক্ষে অন অন-অ্যারাইভাল ভিসা চালু হওয়ার পর, মিশরের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতার কারণে কোনো কোনো বিমানবন্দরে সাময়িক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। বিষয়টি বাংলাদেশ দুতাবাসের নজরে আসলে রাষ্ট্রদূত তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করে বিষয়টি সুরাহা করেন। মিশরের যে কোনো বন্দর থেকে অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা পাওয়ার শর্ত হচ্ছে, সাধারণ পাসপোর্টধারীদের পাসপোর্টে জাপান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও শেনজেনভুক্ত ইউরোপীয় দেশের বৈধ ও ব্যবহৃত ভিসা কিংবা রেসিডেন্স পারমিট থাকতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আশা করছি এই সুবিধা গ্রহণ করতে বাংলাদেশিদের আর সমস্যা হবে না। তবে ভুল বুঝাবুঝির কারণে কিছুক্ষেত্রে এখনো সমস্যা দেখা যাচ্ছে। যেমন, পারমানেন্ট রেসিডেন্সি থাকা সত্ত্বেও অনেকে আসতে পারছেন না। বিষয়টি আমি মিশরীয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সমস্যা হলো, অনেক বিদেশি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে অবহিত নয়। কারণ তাদের কাছে বিষয়টি নতুন এবং এ সংক্রান্ত লিখিত প্রমাণাদি নেই। তিনি আরও বলেন, 'উপর্যুক্ত দেশগুলোর ব্যবহৃত ভিসা বা রেসিডেন্ট পারমিট থাকলে পৃথিবীর যেকোনো দেশ ভ্রমণের সময় ট্রানজিটে কিংবা সরাসরি মিশর প্রবেশ করা যাবে। যারা কায়রো ট্রানজিট নিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকা ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য এই সুবিধা বেশি সুফল দেবে।
আগ্রহী বাংলাদেশিদের মিশর ভ্রমণের সময় দেশটির সরকারি পরিপত্রটি অনুবাদের কপিসহ সঙ্গে রাখতেও অনুরোধ জানান মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য মিশরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ভিসা ব্যবস্থা শিথিল ও সহজীকরণের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
শান্ত/অননিউজ