মুরাদনগরের ২২টি ইউনিয়নের মধে ২১ নং বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের বর্তমান নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন মুন্সি চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি প্রার্থিতা চাইবেন। তবে সাধারন মানুষদের মনোভাবটা বদলে গেছে। বিগত দিনে যত কাজ করেছেন তার সবটাই ছিল সরকারী রুটিন ওয়ার্ক। দৃশ্যমান যত উন্নয়ন- তার পুরোটাই দাবীদার মাননীয় সাংসদ। পছন্দের তালিকায় রেখেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আরমান হোসেনকে। এছাড়াও আছেন সাধারন সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হেসেন, সভাপতি মোবারক হোসেন মুন্সি, ওয়াহেদুজ্জামান জামাল সরকার। অনেক গুলো পজেটিভ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে মুরাদনগরের ২২ টি ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থিরা নিরবে জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। তবে এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের জন্য দলের সিনিয়র নেতা ও নীতি নির্ধারকদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। তবে শেষ অব্দি কার ভাগ্যে নৌকার টিকেট জুটবে- সেটা সময়ের ব্যাপার। উল্লেখ্য যে, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ২২ টি ইউনিয়নের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের ০৮ নং ওয়ার্ডের ভোটার মোঃ মো: আরমান হোসেন। তিনি বলেন, আমার অতীতের পলিটিকেল ক্যারিয়ার ও এলাকার গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করলে আমি ইনশাআল্লাহ দল থেকে নমিনেটেড হতে পারবো এবার।
৬৭ বছরের প্রবীন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোবারক হোসেন মুন্সি ০৯ নং ওয়ার্ডের ভোটার বেড়ে উঠেছেন এই জনপদে। পড়াশোনা শেষ করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। ছাত্র অবস্থায় তিনি মুজিববাদী ছাত্র লীগের রাজনীতি করতেন । ১৯৭৩ সালে সোনালী ব্যাংকে অফিসার পদে যোগদান করেন। আর তখন থেকে তিনি সিবিএ (২০২) নেতৃত্ব দেন। সব শেষে ২০০৯ সালে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাবুটিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে এখন পর্যন্ত দায়ীত্ব পালন করছেন।
এদিকে বর্তমান চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মুন্সি বিগত দিনে তার সিমাবদ্ধতার মধ্যে এলাকায় না থেকেও সরকারী রুটিনওয়ার্ক সফলতায় আনতে পারেননি। ফলে এলাকার জনগন ইউনিয়ন পরিষধের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বিগত কয়েক বছরে। কারন ঢাকায় একটি ব্যাংকে কর্মরত থাকেন। এদিকে সাখাওয়াত হেসেন সাধারণ মানুষকে সেবার মনোভাব নিয়ে সহযোগীতা করে আসছেন। তিনি বলেন,উন্নয়নের রোল মডেলের প্রতীক নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে আগামীতে কাজ করার ইচ্ছে আছে আমার যদি দল থেকে এবার দলীয় প্রতীক নির্বাচন করতে পারি । মুরাদনগর উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন বর্তমান। আর এখানকার সাংসদ আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি। সাংসদের দিক নির্দেশনা ও পৃষ্টপোষকতায় যথেষ্ঠ উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে তার এলাকায়। এখানকার রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো উন্নয়নে যথেষ্ট দৃশ্যমান। সবকটি চেয়ারম্যান সরকার দলীয়। আগামী ইউপি নির্বাচনের বর্তমান চেয়ারম্যান ছাড়াও আরো কয়েকজন দল থেকে নমিনেটেড হতে চাইছেন। এরমাঝে আরমান হোসেন, মোবারক হোসেন মুন্সি, কাজী সাখাওয়াত হোসেন ও ওয়াহেদুজ্জামান ।
এদিকে সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ইতি মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছেন। মার্চ থেকে শুরু করে জুন মাসের শেষ নাগাদ ধারাবাহিক ভাবে গত বারের মত ৫ ধাপে নির্বাচন শেষ করতে চান স্থানীয় মাঠ প্রশাসন। দেশে বর্তমানে ৪ হাজার ৫৭১ টি ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যমান। ২০১৬ সালে ২২ শে মার্চ শুরু হয়ে ৪ জুন পর্যন্ত কয়েক ধাপে নির্বাচন সমাপ্ত করে সরকার। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুসারে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিন পূর্বে পরবর্তী পরিষদের গ্রহণযোগ্যতা থাকে। আর সেই আলোকে কুমিল্লা ১৭ টি উপজেলার ৩১২ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই কুমিল্লার মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন সি.ই.সি। এর মধ্যে লাকসাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ, মনোহরগঞ্জের ১১ টি ইউনিয়ন, লালমাই উপজেলা ১১ টি , দেবিদ্বারে ১৫ টি ও মুরাদনগরের ২২ অন্যতম।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এবার যারা মনোনয়ন প্রত্যাশি সবাই আওয়ামী দলীয় নেতা কর্মী। দীর্ঘ দিন যাবৎ এ এলাকার রাজনীতিবীদ জাহানঙ্গীর আলম সরকার ও ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের ২ টি বলয় কাজ করে আসছে। এবারের নির্বাচনেও তাই হবে। তবে এমপি কাকে রেখে কাকে দলীয় টিকেট দেবেন- তা নিয়ে ঝল্পনা কল্পনার শেষ নেই। ২২টি ইউনিয়নের সকল প্রার্থীরাই মনে করেন তারা এমপির পছন্দের মানুষ। এই পছন্দের প্রার্থীতা বাছাই করতে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের কাউন্সিল অধিবেশন কিংবা বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে দলীয় ভাবে নমিনেটেড করলে কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর আগমন ঘটবে না। সবাই তার জন্য এক হয়ে কাজ করবেন। এ বিষয়ে মোঃ মোবারক হোসেন মুন্সি ও আরমান হোসেন বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবার তেমন কোন সুযোগ নাই। মাননীয় এমপি মহোদয় যে সিদ্ধান্ত দেবেন বা যাকে দল থেকে নমিনেটেড করবেন, আমরা তার জন্যই কাজ করে যাবো আগামী দিন গুলোতে। এবং নৌকার প্রার্থীকে বিজয় করতে নিশ্চিত করবো। পাশাপশি জননেত্রী শেখ হাসিনার এবারের প্রতিপাদ্য- “আমার গ্রাম-আমার শহর” বাস্তবায়িত করতে আমরা বদ্ধ পরিকর।
তবে সকল প্রার্থিরাই এক বাক্যে বলেন, এখানকার সকল উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দু আমার মাননীয় সাংসদ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন এর দিক নির্দেশনা ও পৃষ্টপোষকতায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখার চেষ্টা করবো। যদি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই- তাহলে স্বচ্ছতার মধ্যেই কাজ করে যাবো জনগণের জন্য।
এদিকে ১২ হাজার ভোটারদের মাঝে ৩০% নবীন এবং তরুণ ভোটাররা আগামীতে আরমান হোসেনকে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনে জয়ী করতে তার পিছনে একাট্টা। ১৯৯১ থেকে যুবলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার কারণে মাননীয় এমপির পছন্দের মানুষ। অপরদিকে মোবারক হোসেন মুন্সি বলেন, ১/১১ এর দুঃসমেয়ে অনেক নেতা কর্মীরা গা বাচাতে অন্যত্র চলে গেলেও আমি এলাকায় থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম। মোবারক মুন্সি বলেন, আমি সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে আসছি। আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আর আমার প্রিয় নেতা মাননীয় সাংসদ। অপরদিকে আরমান হোসেন বলেন, জীবনে কোনদিন দলের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাজনীতি বাণিজ্য করি নাই।চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি করার প্রিভিয়াস রেকর্ড নেই। এলাকার দরবার-শালিস বিচারে কোন পক্ষপাতিত্ব করি না। আর কোন গ্রুপিংয়ের রাজনীতি আমি করি না। কাউকে করতে উৎসাহ দেই না। আমার শুধু একটাই গ্রুপ- আর তা হল জননেত্রীর শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির পাশাপশি জনগণের সেবা প্রদান করা।