কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাইড়া মোঃ আরিফ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগে ইউএনও আলাউদ্দিন ভূইয়া জনীর বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন কলেজ পরিচালনা পরিষদ। আইনগত ক্ষমতা না থাকায় অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না মর্মে মহামান্য হাইকোর্ট ইউএনও’র জারীকৃত আদেশের কার্যক্রম আগামী ৬ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছেন। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি তিন মাস আগের আনীত অভিযোগের তদন্ত করাচ্ছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দীন ভুঞা জনী গত ২৯ ডিসেম্বর বাইড়া মো: আরিফ স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি আলী ইমাম কাউছার রুবেলকে নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলেজ সভাপতি আলী ইমাম কাউছার রুবেল গত ৮ জানুয়ারি মহামান্য হাইকোর্টে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাইড়া আরিফ স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কামাল উদ্দিন আহমেদকে প্রতিপক্ষ করে একটি রীট পিটিশন দায়ের করেন (যার নং ১৬৫/২০২৩)। আবেদনকারীর পক্ষে রীট পিটিশনটি পরিচালনা করেন, এডভোকেট খন্দকার খালিকুর রহমান।
মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও মো: বশির উল্লাহ’র যৌথ বেঞ্চ অধ্যক্ষ নিয়োগ সংক্রান্ত ইউএনও’র জারিকৃত আদেশ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। একই সাথে উক্ত বিষয়ে ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দাখিলের জন্য ইউএনওসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে রুলনিশি জারি করেন। ওই রীটের আদেশকে পাশ কাটিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দীন ভুঞা জনী উদ্দেশ্য প্রনোদীত ভাবে গত ১১ জানুয়ারি বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। সে মতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গত ১৭ জানুয়ারি অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীদের ২২ জানুয়ারি রোববার সকাল ১১টায় প্রয়োজনীয় সাক্ষী ও তথ্য প্রমানাদিসহ কলেজে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন। রোববার দুপুরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু সরেজমিন তদন্তে যায়। তদন্তকালে অভিযোগ কারীদের বক্তব্যের সাথে অভিযোগের কোন প্রকার মিল পাওয়া যায়নি। অভিযোগকারীরা কোন প্রকার তথ্য প্রমানাদি উপস্থাপন করতে পারেনি বলে জানা গেছে।
উক্ত বিষয়ে অভিযোগকারী আনিছুর রহমান তানিম সাক্ষ্য ও প্রমানাদি নিয়ে উপস্থিত থাকতে পারেননি কেন? জানতে চাইলে তিনি ক্ষেপে ওঠেন এবং আমতা আমতা করে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি আলী ইমাম কাউছার রুবেল বলেন, অধ্যক্ষ নিয়োগে ইউএনওর অবৈধ হস্তক্ষের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এবং উদ্দেশ্য প্রনোদীত ভাবে গত ২২ জানুয়ারি আমার বিরুদ্ধে ৩ মাস আগের একটি অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। যেই অভিযোগের তদন্ত করছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক হওয়ার পরও ইউএনও আমাকে তিন মাস পরে এসে হেনস্তা করছেন। আমি বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্টকে অবহিত করবো।
তদন্ত কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ মোতাবেক বিষয়টির তদন্ত চলছে। অভিযোগ কারীদের সাক্ষ্য ও প্রমানাদি নিয়ে উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তারা সভাপতির বিরুদ্ধে কোন সাক্ষ্য ও প্রমানাদি উপস্থাপন করতে পারেননি। যার ফলে তাদেরকে সাক্ষ্য প্রামাণাদির জন্য আরো দুই দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দীন ভূইয়া জনী বলেন, ‘অধ্যক্ষ নিয়োগে কোন বাঁধা নেই। আমি মহামান্য হাইকোর্টে জবাব দিব। তবে বিষয়টি নিয়ে কলেজ সভাপতি একটু বেশী বাড়াবাড়ি করছেন।’