কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামে ড্রেজারের গর্তে পড়ে দুলাল মিয়া (৪৪) নামে এক কৃষক নিখোঁজ রয়েছে। সে একই গ্রামের মৃত ছন্দু মিয়ার ছেলে। এলাকাবাসী ওই ড্রেজিংয়ের গর্তে জাল ফেলে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পায়নি। এ ঘটনায় নবীপুর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। একই সাথে ড্রেজার ও ভেকু বন্ধে প্রশাসনের উদাসীনতায় জনমনে নানা প্রশান দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন গেলে স্থানীয়রা জানায়, নবীপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার আবদুল হালিমের ছেলে ও উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আলী একটানা চার বছর একই জায়গায় তিন ফসলি কৃষি জমিতে ড্রেজিং করে যাচ্ছে। সে ক্ষমতাসীন দলের লোক হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে গভীর ড্রেজিংয়ের কারণে আশ-পাশের জমি ভেঙে বিশাল দিঘিতে পরিনত হয়েছে। নিখোঁজ কৃষক দুলাল মিয়া শনিবার সকাল আনুমানিক ১০টায় কৃষি জমিতে পানি দিতে গিয়ে ড্রেজিংয়ের গর্তে ডুবে যায়। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করতে কয়েক গ্রামের মানুষ জড়ো হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ছুটে যায়। পানির গভীরতা মেপে তারা ডুবুরীকে খবর দেয়।
এ সময় উত্তেজিত কৃষকগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ড্রেজার ও ভেকু ব্যবসায়ীরা এতটাই শক্তিশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ পর্যন্ত দেওয়া যায় না। কেউ ড্রেজিং নিয়ে কথা বললেই তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ড্রেজিংয়ের মালিক মোহাম্মদ আলী মাত্র কয়েক শতক জমিতে ড্রেজার বসিয়ে খনন শুরু করে এখন পুরো বিল দখলে নিয়েছে। গর্তে পড়ে যাওয়া জমির কৃষকরা বাধ্য হয়ে ড্রেজিং মালিকের কাছে নামমাত্র বিক্রি করছে।
মুরাদনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা নুরুল হুদা বলেন, আমরা একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। প্রাথমিক ভাবে চেষ্টা করে বুঝতে পারি পানির অনেক গভীরতা। এটি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই ফায়ার সার্ভিসের চৌকস ডুবুরী টিমকে খবর দিয়েছি। তারা চাঁদপুর থেকে আসতেছে।
মুরাদনগর থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখনো নিখোঁজ যুবকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পুলিশ ডুবুরীর জন্য অপেক্ষা করছে।