কুমিল্লার মুরাদনগরে ফিল্মি স্টাইলে প্রকাশ্য দিবালোকে পিস্তল ঠেকিয়ে কলেজ ছাত্রী ইসরাত জাহান জান্নাতকে (১৭) নিজ বাড়ি থেকে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে উঠিয়ে অপহরণ করে একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় উপজেলা সদরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তরুণীর মা আবিদা সুলতানা ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩ জনের নামে থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। সোমবার দুপুরে উপজেলা সদরের মাস্টার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলো, উপজেলার করিমপুর গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে আজিজুর রহমান রনি (৩৫), তার ভাই হাবিবুর রহমান সানি (২১), উপজেলা সদরের তকদির হোসেনের ছেলে রাব্বি (২৪) ও কামরুল (২৫)। অপহৃত কলেজছাত্রী ইসরাত জাহান (১৭) উপজেলা সদরের মাস্টার পাড়া এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে এবং কাজী নোমান আহমেদ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত মতিউর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান সানি কলেজ ছাত্রী নুসরাত জাহান জান্নাতকে উত্যোক্তসহ কলেজে আসা যাওয়ার পথে বিরক্ত করে করে আসছিল। তাছাড়াও বিভিন্ন সময় নুসরাত জাহান জান্নাতকে অশ্লীল ভাষায় ডাকাডাকি করতো। সোমবার দুপুরে উপজেলা সদরের মাস্টার পাড়া এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে হাবিবুর রহমান সানির নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র, রামদা, পিস্তলসহ অভিযুক্তরা অপহরণে নেতৃত্ব দেয়।
এ সময় সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র দেখে আশ-পাশের লোকজন আতঙ্কে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করে। পরে কলেজছাত্রী নুসরাত জাহান জান্নাতকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে তার মা বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপহরণকারীরা তার মাকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারধোর করেন এবং পিস্তল ঠেকিয়ে জোরপূর্বক জান্নাতকে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। তখন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
অপহৃত কলেজ ছাত্রীর মা সুলতানা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমি বাড়ির ময়লা ফেলার জন্য গেট খুললে কোনকিছু বুঝার আগেই মুহূুর্তের মধ্যেই হাবিবুর রহমান সানিসহ দ’ুজন আমার বাসায় প্রবেশ করে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আমাকে মারধর করে আমার মেয়েকে জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এ সময় আমি চিৎকার করলে সানির ভাই আজিজুর রহমান রনি বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমাকে হুমকি ধমকি দেয়। আজিজুর রহমান রনির নির্দেশেই তার ভাই হাবিবুর রহমান সানি আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবিসহ দ্রæত আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।
মুরাদনগর থানার ওসি আবুল হাসিম বলেন, এ বিষয়ে সোমবার রাতে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করার চেষ্টা করছি। এ ছাড়াও ওই কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধারপূর্বক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।