কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইউসুফনগর গ্রামের হুমায়ুন ও মাহবুবকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী সফিকুল ইসলাম বাবুকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাকে কুমিল্লার কেন্দ্রিয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। ধৃত সফিকুল ইসলাম বাবু ইউসুফনগর গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে। সে পালিয়ে যাওয়ার সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতা ও বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমার জের ধরে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ইউসুফনগর গ্রামের মৃত মুর্শিদ মিয়ার ছেলে মো: হুমায়ুন ও আবদুস ছাত্তারের ছেলে মো: মাহবুবের উপর প্রকাশ্য দিবালোকে অতর্কিতে হামলা চালায়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে হুমায়ুন মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় আহত মো: মাহবুবের ভাই আবুল কালাম বাদী হয়ে কুমিল্লার ৮নং আমলী আদালতে একটি পিটিশন মামলা করেন। ওই মামলায় ইউসুফনগর গ্রামের মৃত আবদুল মজিদের ছেলে আবুল কালাম আজাদ ওরফে আবু মোল্লা ও মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে সফিকুল ইসলাম বাবুসহ ১৪ জন নামধারী ও অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ কে অভিযুক্ত করা হয়। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মামলাটিকে এফআইআরভূক্ত করার জন্য মুরাদনগর থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়।
মুরাদনগর থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় মামলাটিকে প্রথমে পিবিআই কুমিল্লা ও পরে জেলা গোয়েন্দা শাখায় স্থানান্তর করা হয়। অধিকতর তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখা ১৩ জনের বিরুদ্ধে উক্ত মামলার চার্জশীট প্রদান করে। তবে রহস্যজনক কারণে মূল আসামী আবুল কালাম আজাদ ওরফে আবু মোল্লাকে এ মামলার চার্জশীট থেকে বাদ দেওয়া হয়। তাকে অভিযুক্ত করতে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন বলে জানান মামলার বাদী আবুল কালাম। আদালতের বিচারক চার্জশীট গ্রহন করে আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ারা জারি করেন।
এ দিকে উক্ত মামলার মূল আসামী আবুল কালাম আজাদ ওরফে আবু মোল্লা দীর্ঘ ১ মাস ২৭ দিন কারাগারে থেকে জামিনে মুক্তিলাভ করেন। এ ছাড়াও আবু মোল্লার বিরুদ্ধে আরো ২টি মামলা ও ধৃত বাবুর বিরুদ্ধে আরো ৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এ মামলায় আরো ৩ জন আসামী পলাতক রয়েছে। ওয়ারেন্ট থাকা সত্বেও আসামীরা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। এলাকার সাধারণ নিরীহ মানুষ প্রতিবাদ করাতো দূরের খথা ভয়েও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
মুরাদনগর থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ওয়ারেন্টভূক্ত আসামীরা পলাতক থাকায় তাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না, তবে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।