আজিজুল হক, মুরাদনগর।।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিন ইউনিয়নের যশমন্তপুর গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া পরিবার গুলো গত তিন মাস পানি বন্ধি। নিচু জমিতে ঘরগুলো নির্মাণ করায় সামান্য বৃষ্টিতেই সেগুলো তলিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন না। টিউবওয়েল না থাকায় রয়েছে খাবার পানির অভাব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাবিটা প্রকল্পের অর্থায়নে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীন দ্বিতীয় পর্যায়ে উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিন ইউনিয়নের যশমন্তপুর গ্রামের খাসজমিতে গৃহহীনদের জন্য ৩৬টি ঘর নির্মাণ করা হয়। গত মে মাসে গৃহহীনদের মাঝে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে রাস্তা থেকে নিচু এলাকায় নির্মাণ করায় সামান্য বৃষ্টির পানিতেই ঘরগুলো ডুবে যাচ্ছে। এতে উপকারভোগীদের ভোগান্তি কমার চেয়ে বরং বেড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় গত তিন মাস ধরে তারা পানি বন্ধি। হাটুপানি ভেঙ্গে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। ফলে হাতে পায়ে গা ধরেছে অনেকের। পানিতে ডুবে থাকায় ব্যবহার করতে পারছেন না টয়লেট। টিউবওয়েল না থাকায় রয়েছে খাবার পানির অভাব। জ্বর-ঠান্ডা ও ডায়রিয়া তাদের নিত্য সঙ্গি।
উপকারভোগী মনি রানী, ধীরেন্দ্র দেবনাথ, হেলেনা বেগম ও শোভা আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে থাকার জন্য ঘর দিয়েছেন। গত ৪ মাস আগে আমরা উপহারের এ ঘর পেয়ে বেশ আনন্দিত হয়েছিলাম। আনন্দের একমাস যাওয়ার পরেই গত ৩ মাস ধরে আমরা পানিবন্ধি। টিউবওয়েল না থাকার কারণে পানি ভেঙ্গে দূর থেকে পানি আনতে হয়। ফলে হাতে পায়ে গা হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে টয়লেটের। কারণ পানির নীচে টয়লেট। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আছি আতংকে। তারা চোখের পলকেই পানির মধ্যে নেমে যায়। জ্বর-ঠান্ড আর পাতলা পায়খানা লেগেই আছে। দরজার সামনে পানি তাই সাপ ও অন্যান্য পোকামাকড়ের ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারছি না। অনেক সময় রাত জেগে লাঠিহাতে বসে থাকতে হচ্ছে। কিছু পরিবার অন্যত্র চলে গেলেও আমরা না পারছি ছেড়ে যেতে, না পারছি এখানে থাকতে। রেনু বেগম (৬০) নামের আরেক উপকারভোগী বলেন, আমি পানিতে পড়ে পা ভেঙ্গে ফেলেছি।
স্থানীয় ৮নং ইউপি সদস্য সোহেল রানা বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় আর নিচু এলাকায় ঘর নির্মান করায় আশ্রয়ন প্রকল্পের ৩৬টি পরিবার দির্ঘদিন পানিবন্ধি। টিউবওয়েল না থাকার কারণে বিশুদ্ধ পানিরও অভাব রয়েছে তাদের।থ
রামচন্দ্রপুর দক্ষিন ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন বলেন, ‘তারা যে দুর্ভোগে আছে ঘটনাটি সত্য। তাদের দুর্ভোগ লাগবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলাউদ্দীন ভূঁঞা জনি বলেন, পানি সরানোর জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থার প্রয়োজন। তাই এডিপি থেকে অচিরেই টেন্ডার আহবান করা হবে। অপর দিকে এখানে ৪টি গভীর নলকুপ স্থাপন করার জন্য টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারের উদাসীনতার কারণে কাজটি দেরি হচ্ছে। এ নিয়ে একাধিকবার জনস্বাস্থ্য বিভাগের সাথে কথা বলেছি।