বিয়ে বাড়ির খাওয়া শেষে বরের হাত ধুইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বকশিশ নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে বর ও কনেসহ অন্তত: ১৫ জন আহত হয়েছে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিয়ে সম্পন্ন না করেই বরপক্ষ কনের বাড়ি থেকে ফিরে গেছে। এ ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ হয়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বর সাদেক হোসেন (২৬) দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের ইসমাইল মূন্সীর ছেলে। কনে সোনিয়া আক্তার (১৮) মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের শানু মিয়ার কন্যা। বর এবং কনে পক্ষ পূর্বের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে রোববার পারিবারিক ভাবে বিয়ের দিন তারিখ ধার্য ছিল। দুপুরের পর বরযাত্রী কনের বাড়িতে গেলে, বিয়ের গেইটের সালামি নিয়ে প্রথমে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে খাওয়া দাওয়ায় বরপক্ষকে খাবার পরিমানে কম দেওয়া এবং বরের হাত ধোয়ানোর বকশিশের টাকা নিয়ে আবারও দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে বর পক্ষের ১০ জন ও কনে পক্ষের ৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম, সায়মা বেগম, কামাল হোসেন, ফয়েজ আহমেদ, জুয়েল আহমেদ, বাবু মিয়া ও হেলাল মিয়া মুরাদনগর ও দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কনের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেন, বর পক্ষ ১২০ জন লোক নিয়ে আসার কথা থাকলেও তারা এসেছেন ১৬০ জন। তাদের খাওয়া দাওয়া শেষ করার পর বরের হাত ধোয়ার বকশিশের দরকষা-কষিতে দু’পক্ষের দ্বন্দ শুরু হয়। এক পর্যায়ে কনের পক্ষের মেয়েদেরকে বরপক্ষের লোকজন অকথ্যভাষায় গালমন্দ, মারধর করে। এ অবস্থায় ওই বাড়ির লোকজন বরপক্ষকে শান্ত করতে গেলে তারা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে কনে সোনিয়া আক্তার, সোহেল মিয়া, সানাউল্লাহ, শিপন মিয়াসহ ৫-৬ জন আহত হয়। অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, বরপক্ষের লোকজন কনের কক্ষে ঢুকে স্বর্নালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
বরের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা বিয়ে বাড়ির সদর দরজায় আসার পর বখশিশের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমরা পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ শত টাকা দেওয়ার পরও আরো ৫শত টাকা দিলে কনে পক্ষের লোকজন গেইটের চেয়ার-টেবিল ছুড়ে ফেলে। আমাদের লোকদের পর্যাপ্ত পরিমান খাবার দিতে পারে নাই। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বরের পরিহিত জামা-কাপড় ছিড়ে আমাদের মহিলা বরযাত্রীর উপরও হামলা করে। আমি থামাতে গেলে মারধরের আঘাতে অচেতন হয়ে পড়ি।
মুরাদনগর থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। জেলা পরিষদের নির্বাচনের কারণে ব্যস্ত থাকায় কাউকে পাঠাতে পারিনি। সহসাই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।