মুরাদনগর নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ
মো. সাজ্জাদ হোসেন, মুরাদনগর।।
কুমিল্লার মুরাদনগর নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে আন্দেলনরত শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তার।
বৃহস্পতিবার সন্ধায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে আসলে তিনি আন্দেলনরত শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ‘বর্তমানে কিছু সমস্যার কারণে আমি প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে স্ব-ইচ্ছায় , স্ব-জ্ঞানে পদত্যাগ করিলাম।’
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তারের বিরুদ্ধে অসদাচারণ, সেচ্ছাচারিতা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে বহিরাগতদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষক শিক্ষাথর্ীদের বিভিন্নভাবে হেয়প্রতিপন্ন করাসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। যার ফলে শিক্ষাথর্ীরা ক্লাস বন্ধ রেখে প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে দীর্ঘ একমাস যাবত বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ, ইউএনও অফিস ও বাসভবন ঘেড়াও করে আসছিল।
আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষাথর্ী বলেন, আন্দোলনের ফলে একাধিক শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন প্ররোচনা ও ভয় দেখানো হয়। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে তীব্র ভীতির সঞ্চার হয়। অভিভাবক প্রতিনিধি ও ইউএনও’র নিকট লিখিত অভিযোগ দিলেও কোন প্রকার বিচার পাইনি। এমন ভীতিকর ও বিশৃংখল পরিস্থিতির জন্য প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তার দায়ী। বাধ্য হয়ে তিনি সেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। আরো একজন সহকারী শিক্ষক পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর প্রধান শিক্ষক পদে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় সৈয়দা হাসিনা আক্তার ১০ নম্বর পেয়ে ৭ম স্থান অধিকার করেন। তখন অদৃশ্য ক্ষমতার খুটির জোরে অবৈধ ভাবে নিয়োগ পান তিনি। দীর্ঘ ১৩ বছর যাবত প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তার বিদ্যালয়টিকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে দূনর্ীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি চালিয়ে আসছেন। এহেন কর্মকান্ড বিভিন্ন পত্রিকায় শিরোনাম হলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেপোষ্ট করলে তিনি একাধিকবার ভাইরাল হন।
এ বিষয়ে পদত্যাগি প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার বলেন, শিক্ষার্থীদের তোপের মূখে নুরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা হাসিনা আক্তারের পদত্যাগের বিষয়টি শুনেছি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষকের সই করা একটি পদত্যাগ পত্রের কপি আন্দোলনরত শিক্ষাথর্ীরা এসে আমার কাছে জমা দিয়ে যায়।