হজরত মুসা আ. এর সময়ে একবারও বৃষ্টি হয়নি। অনেকদিন বৃষ্টি হয়নি। পশুপাখি পর্যন্ত অনাহারে ছটফট করছিল। এ অবস্থায় হজরত মুসা আ. বনী ইসরাঈল ময়দানে বৃষ্টির জন্য দোয়া করতে গেলেন।
আল্লাহ বললেন, আপনাদের দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত এই মজলিস থেকে এক ব্যক্তি উঠে না যাবে। সে আমার সাথে নাফরমানী করে যাচ্ছে এবং আমার সামনে নতি স্বীকার করছে না।
হজরত মুসা আ. মজলিসে ঘোষণা দিলেন, হে ভাই! কে সে নাফরমান? যার কারণে এতগুলো মানুষের দোয়া কবুল করা হবে না? দয়া করে তুমি মজলিস থেকে উঠে যাও। তোমার কারণে পশু-পাখিসহ এতো মানুষ অনাবৃষ্টিতে কষ্ট পাবে এ হয় না।
ঘোষণার পর মজলিস থেকে কেউ উঠল না। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে বৃষ্টি নেমে এল। মুসা আ. লজ্জায় আল্লাহকে বললেন, ইয়া আল্লাহ, সে লোক তো উঠল না। তারপরও বৃষ্টি হল। উম্মতের সামনে আমি ছোট হয়ে গেলাম। উম্মত আমাকে মিথ্যুক মনে করতে পারে।
আল্লাহ বললেন, যার কারণে বৃষ্টি বন্ধ ছিল তার কারণেই এখন বৃষ্টি দিলাম। কারণ, আমার সঙ্গে সে সন্ধি করে ফেলেছে। সে তাওবা করে নতি স্বীকার করে নিয়েছে।
আসলে ঘটনা ছিল এ রকম, মুসা আ.-এর ঘোষণার পর ওই গুনাহগার ব্যক্তি লজ্জায় আল্লাহর কাছে নত হয়ে প্রার্থনা করল, হে মনিব! এই মজলিস থেকে এখন যদি আমি উঠে যাই তাহলে সবাই আমাকে নাফরমান বলে চিনে ফেলবে। আমাকে এতগুলো মানুষের সামনে লজ্জা দিও না। আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আর নাফরমানী করব না। তার মনের অবস্থা দেখে আল্লাহর দয়া হল। তিনি তার গুনাহগার বান্দাকে অন্যদের সামনে অসম্মান না করে বৃষ্টি বর্ষণ করলেন।
এই ঘটনাটি ইসরাইলি রেওয়ায়েত হিসেবে পরিচিতি। ইসরাইলি রেওয়ায়েত বর্ণনার ক্ষেত্রে মূলনীতি হলো-
‘যদি তা মুসলিমদের আকিদা-বিশ্বাস ও ইসলামি শরিয়তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় তবে তা বর্ণনায় কোনো দোষ নেই। হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারিতে এসেছে- ‘বনি ইসরাইল থেকে বর্ণনা করাতে কোনো সমস্যা নেই।’ (সহিহ বুখারি, হাদীস : ৩৪৬১)
এই ঘটনাটি শায়েখ হানিউল হাজ্জ সংকলিত ‘আলফু কিসসাতুন কিসসাতুন মিন কাসাসিস সালিহীনা ওয়াস সালিহাত’ গ্রন্থের ৪১০ নম্বর পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে।
এছাড়া শায়েখ ইবনে কুদামা আলমাকদিসী রচিত ‘আততাওয়াবীন’ গ্রন্থের ৫৫ নম্বর পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে।
সূত্র : বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডট কম
এফআর/অননিউজ