নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বাঁশ পুঁতে গাছের ডালপালা ফেলে মাছ ধরা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের একটি সিন্ডিকেট এর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের আনন্দবাজার ও বারদি ইউনিয়নের নুনেরটেক এলাকার মেঘনা নদীর ছয় কিলোমিটার এলাকায় বাঁশ পুঁতে ও গাছের ডালপালা ফেলে চারপাশে জালের ঘের দিয়ে মাছ নিধন করা হচ্ছে।
মাছ আটকানোর জাল এতই ছোট যে এ জালে রেণুপোনাসহ মা মাছও ধরা পড়ছে।
নুনেরটেক গ্রামের আউয়াল কাজী জানান, এ এলাকার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রতিবছর সিন্ডিকেট করে প্রথমে নদীতে চারদিক বাঁশ পুঁতে পরে মাঝখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের ডালপালা ফেলে কচুরিপানা আটকিয়ে মাছের খাবার দেন। দুই থেকে তিন মাস পর ওই স্থানে মাছের অভয়ারণ্য সৃষ্টি হলে চারদিক জালের ঘের দিয়ে মাছ শিকার করা হয়। বড় মাছের পাশাপাশি পোনা মাছও ধরা পড়ে। এতে মাছ ছাড়াও শামুক, ঝিনুকসহ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেঘনা নদীর এই ছয় কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ৫০টি স্থানে এভাবে বাঁশ পুঁতে মাছ শিকার করা হচ্ছে। প্রতিটি ঝোপ থেকে প্রতি তিন মাস পরপর পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার মাছ ধরা পড়ে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিবছরের মতো এ বছরও মেঘনার এ এলাকায় ঝোপ ফেলে মাছ ধরার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের সমন্বয়ে একটি সিন্ডিকেট করা হয়েছে।
নুনেরটেক গ্রামের বাসিন্দা হোসেন মিয়া জানান, আমি নদীতে চারটি ঝোপ দিয়েছি। এখান থেকে যে আয় হবে তার অংশ কিছু লোককে দিতে হবে। তাছাড়া প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপহার হিসেবে মাছ ও অর্থ দিতে হয়। এভাবেই আমরা প্রতি বছর ঝোপ দেই, এতে মৎস্য আইন লঙ্ঘন হয় কিনা আমার জানা নেই। সাত ভাইয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুকবুল হোসেন জানান, একটি ঝোপ থেকে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার মাছ পাওয়া যায়। লাভের ৫০ ভাগ নেতাদের দিতে হয় আর ৫০ ভাগ টাকা যারা ঝোপ দেয় তারা ভাগাভাগি করে নেয়। এ হিসেবে প্রতি বছর কার্তিক, পৌষ ও মাঘ মাসে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
উপজেলা জৈষ্ঠ মৎস কর্মকর্তা জেসমীন আক্তার জানান, মৎস্য আইন লঙ্ঘন করে যে সব ব্যক্তিরা নদীতে ঘের দিয়ে মাছ শিকার করছে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে এধরনের কথা যদি কেউ বলে থাকে আমি বলব যে মিথ্যা ও বানোয়াট এবং আমার বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই না। কারণ এই ঝোপকে কেন্দ্র করে আমার নাম ও উপজেলা প্রশাসনের নাম বিক্রি করে অনেকেই টাকা তুলে থাকতে পারেন কিন্তু আমি বলতে পারি খুব ভালো ভাবে বলতে পারি আমি কোন অনিয়ম ও অনৈতিকের সাথে জড়িত না।