অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ক্ষেত্রে সরকারী উদ্যোগ বাড়লেও নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে প্রয়োজন অর্থনীতির সুষম বন্টন। বাহাত্তরে সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের সংবিধানের মূলমন্ত্র জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা। অঙ্গীকার ছিলো নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।
বাহাত্তরের ৩০ জুন দেশের প্রথম বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। ওই বাজেটেই মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে কৃষি ও শিক্ষায় দেয়া হয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। পহেলা জুন, ২০২৩ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশের ৫২তম বাজেটের আকার হয় ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। প্রথম বাজেটের তুলনায় ৯৬৮ গুন বড়। টাকার অংকে অর্থনীতি বড় হলেও এখনো কি মানুষের মৌলিক অধিকার পূর্নাঙ্গরূপে নিশ্চিত হয়েছে?
এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার চাচ্ছে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন। যেখানে সব মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা যায়। সেই দিক থেকে বিচার করলে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এগুলোর ব্যপারে কিন্তু বাজেটে গুরুত্ব দিয়েছে। তবে একেবারে সবাইকে এই মৌলিক আধিকারগুলো পুরোপুরি দেওয়া গেছে এই দাবি নিশ্চয়ই সরকারও করবেন না।
৭২ সালে মাথাপিছু জমির পরিমাণ ছিল ২৮ শতাংশ এখন তা ১০ শতাংশ। ফি বছর মানুষের সংখ্যা বাড়ছে ২০ লাখেরও বেশি। কৃষিজমি কমছে ৮ লাখ হেক্টর। তবে সরকারী বেসরকারী উদ্যোগে বাড়ছে খাদ্য উৎপাদন। ৭২ সালে খাদ্যশস্যের মোট উৎপাদন ছিল এক কোটি টন। ২০২এ চার কোটি ৫৪ লাখ টন।
গত বছরই বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১২১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪ তম। ক্ষুধা মেটানোর সক্ষমতায় ভারত ও পাকিস্তানকে বাংলাদেশের পেছনে। ধান উৎপাদনে সম্পূর্ণতা অর্জন করলেও নানা সংকটে আমদানী নির্ভর খাদ্যপণ্যের সরবরাহ।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেন, করোনা কালে এবং করোনার পরে ইউক্রেন যুদ্ধের পর যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, তার ফলে দরিদ্র মানুষ তো বটেই, যারা হিসাব অনুযায়ী দরিদ্র নয়, কিন্তু স্বল্প আয়ের মানুষ এমন আসংখ্য মানুষ আছে তাদের উপর আনেক চাপ পড়ছে এখন। তাই বড় ধরণের কিছু করা দরকার। সরকার এমন কিছু করছে বলেই আমার মনে হয়।
শতভাগ ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়তে আছে উদ্যোগ। প্রস্তাবিত বাজেটেও গুরুত্ব পেয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা। পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন হলে সবার পাতেই জুটবে অন্ন, ক্ষুধামুক্ত হবে বাংলাদেশ।
এফআর/অননিউজ