বাগমারায় বিলসুতিবিলে মাছ চাষ নিয়ে বিরোধের জেরে লাঠিয়াল বাহিনীর লোকজনের হামলায় মৎস্য চাষিদের বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় পালটাপালটি তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতার অতংকে দ্বীপপুর গ্রাম এখন পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে। শনিবার লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধান ইমরান আলীকে পুলিশ
গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। এরপর থেকে আসামিরা গ্রেফতার অতংকে গ্রাম ছেড়ে আতœগোন করেন।
রোববার সরজমিনে দ্বীপপুর গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, বিলসুতি বিলে ৪৩২ একর খাস জলাশ সর্বচ্চ দরদাতা হিসাবে বার্ষিক ৫০ লক্ষ টায় ছয় বছরের জন্য সরকারিভাবে আদর্শ মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী জাহিদুল ইসলাম বাচ্চু ও ইমরান আলী এত বেশি টাকায় বিলটিতে শেয়ার
হতে রাজি না হয়ে মাছ চাষে বিরোধী সৃষ্টি করেন।
এক পর্যায়ে লিজ গ্রতীতা আদর্শ মৎস্যজীবি সমিতির সদস্যদের উচ্ছেদ করে বিলটি অবৈধভাবে দখলে নিতে জাহিদুল ইসলাম বাচ্চু ও ইমরান আলী এলাকার কিছু
কৃষকদের ব্যবহার করে শতাধিক সদস্য বিশিষ্ট একটি লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করেন। এরপর বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ওই লাঠিয়াল বাহিনীর লোকজন কয়েক দফা হামলা চালিয়ে মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি ইসলাম সরদার, মাষ্টার জালাল উদ্দিন ও ইয়াচিন আলীসহ সমিতির কয়েকজন সদস্যের বাড়িঘর ভাংচুর করে এবং সমিতির ৯ জন সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। আশংকাজনক অবস্থায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এছাড়া হামলাকারিরা দুজন গৃহবধূকে শ্রীলতাহানি করে। এ সময় হামলার দৃশ্য ভিডিও করার অপরাধে একজনের মোবাইল ফোন আর অন্যজনের কানের স্বর্নের দুল ছিনিয়ে নিয়ে তাদের পরিবারকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ সময় নিরাপত্তার জন্য ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সহযোগীতা চাওয়া হলে পুলিশ এসে তাদের রক্ষা করেন।
এসব ঘটনায় সমিতির সদস্য মকসেদ আলী বাদি হয়ে লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধান ইমরান আলী ও জাহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে।
এছাড়া এক গৃহবধূকে শ্রীলতাহানি করে কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে তার পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগে ওই গৃহবধূও বাদি হয়ে লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধান ইমরান আলীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় পৃথকভাবে আরও একটি মামলা করেন। অপরদিকে কৃষকদের পক্ষেও হেলাল উদ্দিন বাদি হয়ে আদর্শ মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি ইসলাম সরদারসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে পালটা মামলা করেন।
এ বিষয়ে থানার ওসি তৈহিদুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় পালটাপালটি তিনটি মামলা হয়েছে। লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধান ইমরান আলীকে গ্রেফতার করে রোববার জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
একে/অননিউজ24