বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় একজন প্রার্থী তিনবারের বেশি ‘অবতীর্ণ’ হতে পারবেন না এবং সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর থেকে এ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে।
বিষয়টি নিয়ে এত বেশি চর্চা হচ্ছে যে এই মুহূর্তে ফেসবুকের বহুল আলোচিত শব্দ হলো– বিসিএস। অনেকে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন, অনেকে আবার তিরষ্কারও করছেন।
তিনবার অবতীর্ণ হতে পারার বিষয়টি নিয়ে কিছু ধোঁয়াশাও সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন যে এখানে ‘অবতীর্ণ’ শব্দটি দ্বারা আসলে কী বোঝানো হচ্ছে, সেটি অস্পষ্ট।
এর অর্থ যদি এই হয় যে একজন প্রার্থী তিনবারের বেশি বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবন না, তাহলে যারা ইতোমধ্যে তিনবার পরীক্ষা দিয়েছেন এবং নতুন নির্ধারিত বয়সসীমা নিয়ে আরও পরীক্ষা দিতে পারবেন, তাদের কী হবে?
অথবা, বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারার সুযোগের সংখ্যা সীমিত করার আদৌ প্রয়োজন আছে কি না, করলেও সেটা কত হওয়া উচিৎ ছিল; এ নিয়েও নানাপ্রকার বিতর্ক আছে।
এই প্রশ্নের উত্তর কী হবে, সে বিষয়ে রিজওয়ানা হাসান সুষ্পষ্ট করে কিছু বলেননি। শুক্রবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলো বিবিসি বাংলা। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘এটা আমার কাছেও স্পষ্ট না।
আপনি যেটা দেখেছেন, আমিও সেটাই দেখেছি। সেখানে কিছু নাই, আমার কাছে সেটাই মনে হয়েছে। তবে প্রজ্ঞাপনের পর বিবরণ থাকবে। ব্যাখ্যাগুলো তখন আসবে,’ যোগ করেন তিনি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের সাথে যোগাযোগ হলে তিনি এ বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রপরিষদ সচিবের সাথে কথা বলতে বলেছেন। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
যারা ইতোমধ্যে তিনবার বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছেন তাদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, সে বিষয়ে একটা ব্যাখ্যা দেন সরকারের সাবেক সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান।
তিনি বলেন, এখানে ‘এটা ক্লিয়ারলি বলা হয়নি, এটা সত্য। আমাদের সরকারি সার্কুলারে অস্পষ্টতা থাকে। সেটার আবার পরে ব্যাখ্যা দিতে হয়। এখানেও ব্যাখ্যা দেওয়া উচিৎ এবং সেটা নিশ্চয়ই আসবে।’
‘তবে প্রার্থীদের দ্বিধা থাকতে পারে; কিন্তু আমরা যেহেতু সরকারি চাকরি করেছি, তাই আমরা ভাষাটা বুঝি। সরকারের কোনও আদেশ বা প্রজ্ঞাপন যেদিন প্রণীত হয়, সেদিন থেকে আইন কার্যকর হয়।’
অর্থাৎ, যারা ইতোমধ্যে তিন-চারটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ফেলেছে এবং এখনও কয়েক বছর বয়স আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম ‘প্রযোজ্য করা যাবে না, এটা হয় না সাধারণত।’
তাছাড়া, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তে বলা আছে যে সর্বোচ্চ তিনবার পরীক্ষা দিতে পারবে; কিন্তু সেখানে কোথাও বলা নাই যে যারা পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছে, তারাও পারবে না– তিনি ব্যাখ্যা করেন।
‘প্রজ্ঞাপনের পর এটি কার্যকর হবে। এর বাইরে কোনোকিছু হওয়ার সুযোগ নাই,’ তিনি যোগ করেন।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24