যে কোনো মূল্যে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন- জাসদ

অজিত কুমার দাশ হিমু।।

গুজব রটিয়ে বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের পুজামন্ডপ, মন্দির, ঘরবাড়িতে হামলা ও হত্যা এবং রাজনৈতিক অশান্তি-অস্থিতিশীলতা-সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসাবে জাসদ কক্সবাজার জেলার উদ্যোগে মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১৮ অক্টোবর সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা কক্সবাজার কোর্ট পয়েন্ট চত্ত¡রে জেলা জাসদের সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ হোসাইন মাসুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জাসদ কক্সবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রফিক উদ্দিন চৌধুরী, শহর জাসদ সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম আমান উল্লাহ, জাতীয় যুবজোট কক্সবাজার জেলা সভাপতি অজিত কুমার দাশ হিমু, জাতীয় শ্রমিক জোট, বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি আবদুল জব্বার, নির্মাণ শ্রমিক জোট কক্সবাজার জেলা সভাপতি প্রদীপ দাশ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সম্পাদক আবদুর রহমান প্রমুখ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- শহর জাসদ সহ-সভাপতি একেএম মাহাবুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, শহর জাসদ নেতা- মনির আহমদ, মোঃ সোহেল, জাতীয় যুবজোট প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক একরামুল হক কন্ট্রাক্টার, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কাইছার হামিদ, সদর উপজেলা লোড আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সবুজ, যুবজোট নেতা ডা: নুরুল হক, লিটন দাশ, মোঃ বেলাল, ওবাইদুল হক, ওসমান গণি, কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

সভায় বক্তরা- কুমিল্লায় পুজামন্ডবে গোপনে কোরআন শরীফ রেখে উছিলা তৈরি করে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের উপর হামলা, মন্দিরে হামলা, ঘর-বাড়িতে হামলা-আগুন লাগানো-লুটপাট-নির্যাতন-হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছেন। এসময় বক্তারা বলেন, কোনো হিন্দু পুজামন্ডপে কোরআন শরীফ রেখে নিজেদের ধর্মের অধর্ম করবে না। পুজামন্ডপে কোরআন শরীফ রাখা হিন্দুদের উপর হামলার উছিলা তৈরির একটি সাজানো ও সুপরিকল্পিত ঘটনা। হিন্দুদের উপর হামলার উছিলা তৈরির জন্য যারা পুজামন্ডপে কোরআন শরীফ রেখেছিল তারাই কোরআন শরীফের অবমাননা করেছে। কোরআন শরীফকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার, কোরআন শরীফকে হিন্দুদের উপর হামলার উছিলা হিসাবে ব্যবহার করাই কোরআন শরীফের সবচেয়ে বড় অবমাননা।

বক্তরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সামান্যতম শৈথিল্য না দেখিয়ে কাঠোর হস্তে হিন্দুদের উপর হামলাকারীদের দমন করতে হবে। যে কোনো মূল্যে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বক্তরা আরো বলেন- যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি-শান্তি সহ্য করছে না তারাই সুপরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অশান্তি তৈরির জন্য হিন্দুদের উপর হামলা করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর অপচেষ্টা করছে। তারাই আগুন লাগাচ্ছে, তারাই অতীতে আগুন সন্ত্রাস করেছে, তারাই আগুন যুদ্ধ করেছে।

বক্তরা বলেন- বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা করতে দেয়া হবে না। হিন্দুদের নিরাপত্তা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র রক্ষা ও অসাম্প্রদায়িকতা বজায় রাখার প্রশ্নে কোনো ধরনের আপস দরকষাকষি চলবে না। ধর্মান্ধ মৌলবাদী-জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী ও তাদের রাজনৈতিক পার্টনাররা বাংলাদেশকে তলেবানী রাষ্ট্র বানানোর যতই দিবাস্বপ্ন দেখুক না কেন, বাংলাদেশকে তালিবানী রাষ্ট্র বানানোর রাজনীতি প্রতিহত করা হবে। এছাড়া হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রশাসনের উপর ছেড়ে না দিয়ে, হাতগুটিয়ে বসে না থেকে, অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক-সামাজিক কর্মী ও শান্তি প্রিয় জনগণকে মাঠে নেমে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

বক্তরা জাসদের নেতা-কর্মীদের ১৪ দলসহ সকল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক-সামাজিক শক্তিকে নিয়ে পাড়া-মহল্লায় সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ২৪।।

আরো দেখুনঃ