যৌতুকের নির্মমতার শিকার, দুই মাসের শিশুকে নিয়ে রাস্তায় কিশোরী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি।।

পঞ্চগড়ে যৌতুকের শিকার হয়ে স্বামী শ্বশুরবাড়ির নির্মম নির্যাতনে দুই মাসের অসুস্থ্য কন‍্যা শিশু নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে আটক হয়েছে তাসমিনা আক্তার (১৭) নামে এক কিশোরী মা। পরে পুলিশ হেফাজতে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) সন্ধায় পঞ্চগড় শহরের সি এন্ড বি মোড় এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যৌতুকের দাবীতে স্বামী ও শ্বশুর- শ্বাশুড়ির লোকেদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই কিশোরী বাবার বাড়ি থেকে অজানার উদ্দেশ্যে বের হয়। একসময় পঞ্চগড় শহরের সি.এন্ড.বি মোড় এলাকায় ঘুরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পঞ্চগড় থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অসুস্থ্য শিশুসহ ও কিশোরীকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।

আরো জানা যায়, তাসমিনা নামের ওই কিশোরী পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের পেলকুজোত গ্রামের হতদরিদ্র তরিকুল ইসলামের মেয়ে। সে একই ইউনিয়নের বন্দিভিটা গ্রামের খয়রুল ইসলামের ছেলে আরিফ হোসেনের স্ত্রী।

খবর পেয়ে হাসপাতালে গেলে ওই কিশোরী তাসমিনা আক্তার সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, ২০২০ সালে আরিফের সাথে পারিবারিক ভাবে ঘটা করে বিয়ে হয় তার। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে বাবা এক লাখ টাকা দেয়। বিয়ের কদিনের মাথায় সন্তান সম্ভাবা হই। কয়েক মাস পরেই যৌতুকের দাবী তুলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। দাবী পূরণ করতে না পারায় স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকেরা আমার উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। তাদের নির্যাতনে প্রথম সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর আবার সন্তান সম্ভাবা হই। একই সাথে আমার উপর বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রা। বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে জন্ম দেই এই কন‍্যা শিশুর। স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকেরা খবর না নেয়ায় অতিরিক্ত দু’জনের ভার দারিদ্রতার কারণে বাবা নিতে না পারায় বাধ‍্য হয়ে অজানার পথে বের হই।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, খবর পেয়ে আমরা ওই অসুস্থ শিশুসহ কিশোরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছে। যৌতুক বা কোন বিষয়ে ওই তরুণে আমাদের এখনো অভিযোগ করে নি। আমরা তার বাবার বাড়ি ও স্বামীর বাড়ির লোকেদের থানায় আসার খবর দিয়েছি। তারা আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরো দেখুনঃ