রংপুরে আওয়ামী লীগের ‘বি টিম’, সারজিসের স্ট্যাটাস

অনলাইন ডেস্ক।।

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের রংপুরের বাড়িতে ‘সামান্য আগুন’ নিয়ে যাদের এত চিন্তা, তারা গত ৯ মাসে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও খুনিদের ধরতে কয়টি অভিযান চালিয়েছে, এই প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আমরা এখনো যথেষ্ট সম্মানের জায়গায় রাখি। কিন্তু ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে তাদেরও স্পষ্ট অবস্থান এবং কার্যক্রম আমরা দেখতে চাই।’

রোববার (১ জুন) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে সারজিস আলম এসব কথা বলেছেন। জি এম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার বিষয়ে শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর মহানগরের পায়রা চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ও জেলার আহ্বায়ক ইমরান আহমেদের সঙ্গে কথা বলেন সেনাসদস্যরা। খবর পেয়ে রাত দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে যান সারজিস আলম। সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর রাত দুইটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতাকে নিয়ে ঘটনাস্থল ছাড়েন তিনি।

এরপর রোববার সন্ধ্যায় ‘রংপুর ও আওয়ামী লীগের B Team জাতীয় পার্টি ইস্যু!’ শিরোনামে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন সারজিস আলম। তার পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হলো:

‘১. তিন দিন আগে রংপুরে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত অবৈধ নির্বাচনের একাধিকবারের অবৈধ মেয়র মোস্তফা আবার মেয়র পদে ফিরে আসার জন্য আওয়ামী লীগের পোষ্য বি টিম জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে রংপুর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে!

২. আওয়ামী লীগ ও ভারতের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করে সাময়িক বিরোধিতার ভান ধরে বিরোধী দলের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছে জাতীয় পার্টি। এমনকি বিএনপি-জামায়াত যখন প্রহসনের অবৈধ নির্বাচন থেকে দূরে থেকেছে, হাজারো অন্যায়, জুলুম, অত্যাচার সহ্য করেছে, তখন এই জাতীয় পার্টি বিরোধী দল সেজে আওয়ামী লীগকে সরকারি দলের বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে! সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছে!

৩. দুই দিন আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের রংপুরে গিয়ে আবার স্থানীয় জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা শুরু করেছে!

৪. অতঃপর যখন রংপুরের ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য একসঙ্গে জি এম কাদের ও জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে অহিংস বিক্ষোভ মিছিল করে, তখন জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসীরা সেই বিক্ষোভ মিছিলে প্রথম হামলা চালায়!

এরপর জি এম কাদেরের বাড়িতে একটি বাইক পোড়ানোর ঘটনা দেখা যায়। এই বাইক পোড়ানোর মব বা ভ্যান্ডালিজমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রংপুরে দায়িত্বরত সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্টদের খুঁজতে ৯ মাসের সর্বোচ্চ বড় অপারেশনের জন্য মাঠে নামে! মহানগর বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা ও মহানগরের বৈষম্যবিরোধীর আহ্বায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করা হতেই পারে, এটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যে ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ এই ঘটনা ঘটেছে, সেই ঘটনাগুলোর কারণ কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে না খুঁজে সর্বশেষ বিষয় নিয়ে আদিখ্যেতা দেখানো শুরু হয়।

জি এম কাদেরের বাড়ির পুরোনো বাইক আর সামান্য আগুন নিয়ে যাদের এত চিন্তা, তারা বিগত ৯ মাসে আওয়ামী সন্ত্রাসী–খুনিদের ধরতে কয়টা অভিযান চালিয়েছে? কতজনকে গ্রেপ্তার করেছে? যে মোস্তফা একাধিক অবৈধ নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়ে তার পরিবারের সদস্য ও সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে রংপুরে লুটপাট চালিয়েছেন, কোটি টাকা দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছে, সিটি করপোরেশনকে ডাকাতির ক্ষেত্র বানিয়েছে, সেই মেয়র মোস্তফাকে ধরতে কযত দিন অপারেশন চালানো হয়েছে? ৯ মাসে রংপুরের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী দখলদারদের থেকে জনগণের ন্যায্য সম্পদ-অর্থ উদ্ধারের জন্য কয়টি অভিযান চালানো হয়েছে?

জাতীয় পার্টির যে সন্ত্রাসীরা অবৈধ মেয়র মোস্তফার নেতৃত্বে প্রথম ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা চালিয়েছে, যে জি এম কাদের এলাকায় সন্ত্রাসীদের নিয়ে বৈঠক করে পরিস্থিতিকে উসকে দিয়েছে, তাদের ধরতে কয়টি অভিযান চালানো হয়েছে? বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আমরা এখনো যথেষ্ট সম্মানের জায়গায় রাখি। কিন্তু ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে তাদেরও স্পষ্ট অবস্থান এবং কার্যক্রম আমরা দেখতে চাই। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা তাদেরই বি টিম জাতীয় পার্টিরূপে ফিরে আসার চেষ্টা করলে সেই চেষ্টাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করা হবে।’

সূত্র:বিডি২৪লাইভ

আ/অননিউজ২৪

আরো দেখুনঃ