রাজশাহী- ৪ (বাগমারা) বিএনপিতে হাফ ডজন, একক প্রার্থী নিয়ে মাঠে জামায়াত
আবু বাককার সুজন, বাগমারা (রাজশাহী)

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে এরইমধ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বিএনপি ও অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতের তৎপরতায় বর্তমানে এ আসনের রাজনীতি বেশ উত্তপ্ত। এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছয়জন। দলটির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডি.এম জিয়াউর রহমান জিয়া, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক কামাল হোসেন ও জেলা যুবদলের সদস্য সচিব ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম টুটুল । এদিকে এ আসনে বিএনপির শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বী হয়ে উঠেছে জামায়াত। দলটির মনোনয়ন পেয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমীর ভবানীগঞ্জ ক্লিনিকের পরিচালক ডা. আব্দুল বারী সরদার, যিনি চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে জনসমর্থন তৈরি করেছেন। তাকে শক্ত প্রার্থী হিসাবেই দেখছে অন্য দলগুলো। এ আসনে ভালো কিছু প্রত্যাশা করছে জামায়াত।
রাজশাহী-৪ আসনটি বাগমারা উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত সরদার আমজাদ হোসেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিজয়ী হন বিএনপির প্রার্থী প্রয়াত আবু হেনা। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রকৌশলী এনামুল হক জয়ী হন এবং টানা তিনবার এমপি ছিলেন। ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া আবুল কালাম আজাদ বিজয়ী হন। এ আসনে এবার বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সংখ্যা হাফ ডজন ছাড়িয়েছে। যারা বিভিন্নভাবে দল ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের আস্থা অর্জণের চেষ্টা করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আউচপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রধান শিক্ষক ডি.এম জিয়াউর রহমান জিয়া, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক কামাল হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রেজাউল করিম টুটুল, সাবেক ছাত্রনেতা ও আমেরিকা প্রবাসী ড. জাহিদ দেওয়ান শামীম, ড্যাব নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. আশফাকুর রহমান শেলী ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য ব্যারিস্টার সালেকুজ্জামান সাগর। তাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে মনোনয়নের আশায় মাঠে কাজ করছেন এবং দলের দু:সময়ে সক্রিয় ভূমিকা পালনের দাবি করেছেন। এদিকে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা করে তাদের সাংগঠনিক কর্মকান্ড জোরদার করা হয়েছে। তাদের মনোনয়ন পেয়েছেন ডা. আব্দুল বারী সরদার। এছাড়া স্বৈরাচারের দোসর হিসাবে পরিচিত জাতীয় পার্টি অনিশ্চয়তা সত্বেও তাদের সংগঠনের কর্মকান্ড সচল রেখেছে। উপজেলা জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, দলকে সংগঠিত করার কাজ চলছে এবং তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশী।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ডি.এম জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, আমাদের এই আসনটি একটিমাত্র উপজেলা নিয়েই গঠিত। আমি সেই উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলাম। দলকে তৃণমূল পর্যায়ে আরও সুসংগঠিত করতে আমরা দিন-রাত পরিশ্রম করছি। নেতাকর্মীদের দু:সময়ে পাশে থেকেছি। আমি দীর্ঘ সময় জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছি। ডি.এম জিয়া আরও বলেন, ‘আমি দলের জন্য জেলে গেছি। মামলা হয়েছে। দু:সময়ে মানুষ আমাকে পাশে পেয়েছে। আমি একজন শিক্ষক। তাই সবকিছু বিবেচনা করে আমারই মনোনয়ন পাওয়া উচিত বলে মনে করি।’ অধ্যাপক কামাল হোসেন বলেন, দলের চরম দু:সময়ে আমি সরকারি চাকরি ছেড়ে নেতাকর্মীদের সাহস জুগিয়েছি। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করেছি। হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। জেলে গেছি। দল যদি বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেবে। আমি মানুষের পাশে ছিলাম। মানুষও আমাকেই চায়। জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রেজাউল করিম টুটুল বলেন, আগামী নির্বাচনে দলের পরীক্ষিত নেতাকেই বিএনপি মনোনয়ন দিবে। সে ক্ষেত্রে তিনি শতভাগ আশাবাদী। কারণ বিগত সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত সকল কর্মসূচী পালনসহ ৫ আগস্টের আন্দোলনে রাজপথে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালনকারী পরীক্ষিত নেতা হিসাবে তিনি নিজেকে দাবি করেন। অন্যদিকে এ আসনটিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য জামায়াতও সর্বাতœক প্রস্তুতি নিয়েছে। ডা. আব্দুল বারীকে এ আসনে জামায়াত প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই তারা মাঠের কার্যক্রম শুরু করেছেন। ডা. আব্দুল বারী বলেন, মানুষ গত ১৫ বছরের পুনরাবৃত্তি চায় না। আগে যা কিছু হয়েছে এসব থেকে নতুন কিছু চায়। মানুষ আমাদের ডাকে ব্যাপক সাড়া দিচ্ছে। আমি বিভিন্ন সময় গণসংযোগও করছি। আশা করছি ভালো কিছু হবে। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮০ হাজার ১৭৫। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯১ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৪০ হাজার ৮৮৪।
ই/অননিউজ ২৪