মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির জন্য হুমকি হিসেবে একে অপরকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছে ইরান ও ইসরায়েল। পাশাপাশি দুটি দেশই একে অপরকে ‘চিরশত্রু’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
ইসরাইলে ইরানের নজিরবিহীন হামলার পর রোববার (১৪ এপ্রিল) এ বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েল ও ইরানের রাষ্ট্রদূতরা তাদের স্ব স্ব দেশের অবস্থানের পক্ষে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
ইসরায়েলের দূত জিলাড আরডান ইরানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই হামলার মধ্য দিয়ে মুখোশ খুলে গেছে তাদের। ইরান হলো বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসী তৎপরতার মদতদাতা। এই অঞ্চল ও বিশ্বকে অস্থিতিশীল করতে তাদের সত্যিকার চেহারা বেরিয়ে পড়েছে।
তিনি নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়ে দ্রুতই সম্ভাব্য সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান। একইসঙ্গে তেহরানের বিরুদ্ধে পুনরায় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান জিলাড আরডান।
অন্যদিকে বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাভানি বলেন, ইরান আত্মরক্ষার সহজাত অধিকার চর্চা করছে। নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তাই আত্মরক্ষায় সাড়া দেওয়া ছাড়া ইরানের সামনে আর কোনো উপায় ছিল না।
তিনি বলেন, যুদ্ধের বিস্তৃতি ঘটুক ইরান তা চায় না, তবে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার দেশ সাড়া দেবেই।
সাইদ ইরাভানি আরও বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্যই গাজা উপত্যকায় গণহত্যা বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস দুই পক্ষকেই সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ একটি পূর্ণমাত্রার ধ্বংসাত্মক সংঘাতের মুখোমুখি। এখনই সময় তাদের যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে থেকে ফিরিয়ে আনার। এ অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) বা বিশ্বের কেউ আর যুদ্ধ চায় না।
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাত সদস্য মারা যায়। এর মধ্যে দুজন জেনারেলও ছিলেন। এর জবাবে গত শনিবার মধ্যরাতে ইসরায়েলে তিনশ’র বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সূত্র : এএফপি
এফআর/অননিউজ