২০১২ সালে প্রথমবারের মতো মাঠে গড়ায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। চলমান আসর মিলিয়ে নবমবারের মতো মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি তিনবার শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বরিশাল বুলসকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় কুমিল্লা। এরপর ২০১৮ এবং সর্বশেষ ২০২২ সালের আসরে শিরোপা জেতে দলটি। চলতি আসরে চতুর্থ শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে প্রথম দল হিসেবে বিপিএলের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ইমরুল কায়েসের দল।
মিরপুর শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারের আগেই ১২৫ রান অলআউট হয়ে যায় সিলেট। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সিলেটকে ৪ উইকেটের ব্যবধানে হারায় ইমরুলের দল। এর মাধ্যমে বিপিএলের ইতিহাসে রেকর্ড টানা ১০ জয় তুলে নিয়েছে কুমিল্লা শিবির।
এবারের আসরে টানা তিন হারে শুরু করেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সেখান থেকে গ্রুপ পর্বে টানা ৯ জয় তুলে নিয়ে প্লে অফের মঞ্চে কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নেয় কুমিল্লা।
যেখানে সিলেটকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে রীতিমতো গুড়িয়ে দেয় দলটি। প্রথম পাওয়ারপ্লের মধ্যেই সিলেটের তিন উইকেট তুলে নেয় কুমিল্লার বোলাররা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তৌহিদ হৃদয় শূন্য এবং জাকির হাসান মাত্র ২ রান করে ফিরে যান।
প্রথমবারের মতো বিপিএল খেলতে এসে সিলেটের হয়ে ওপেনিং করা শফিকউল্লাহ গাফারি করেন ৫ রান। শুরুতে দল ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলায় রায়ান বার্ল, মুশফিকুর রহিমের আগে ব্যাটিংয়ে নামেন সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।
ওপেনার নাজমুল শান্তকে নিয়ে ৫৬ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচান সিলেটের এই অধিনায়ক। ১৭ বলে ২টি করে চার-ছয়ে ২৬ রান করে মাশরাফী ফিরলে ভাঙে জুটিটি।
মাশরাফীর বিদায়ের পর দ্রুত ফেরেন শান্তও। এই ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ে ৩৮ রান। এই দুইজনের বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিমের ২৯ রান ছাড়া নিচের দিকে আর কেউই বলার মতো ব্যাটিং করতে পারেননি।
জর্জ লিন্ডের ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান। কুমিল্লার পক্ষে তানভীর ইসলাম, আন্দ্রে রাসেল এবং মুস্তাফিজুর রহমান ২টি করে উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়াও ১টি করে উইকেট নেন মুকিদুল ইসলাম, মঈন আলী এবং সুনীল নারিন।
লক্ষ্য তাড়া করতে এদিন লিটনের সঙ্গে ওপেনিংয়ে পাঠানো হয় নারিনকে। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করেন নারিন। পাওয়ারপ্লেতে নারিন ঝড়ে উড়ন্ত সূচনা পায় কুমিল্লা। তবে একপ্রান্তে অবশ্য টানা উইকেটও হারাতে থাকে দলটি। লিটন ৭, জনসন চার্লস ফেরেন ৪ রান করে।
অন্যপ্রান্তে ঝড় তোলা নারিন করেন ১৮ বলে ৩টি চার ও ৪টি চারে ৩৯ রান। পাওয়ারপ্লেতে এই ৩ উইকেট হারানোর পরও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে কুমিল্লা। তবে লক্ষ্য খুব বেশি বড় না হওয়াতে জয় পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি দলটিকে।
এরজন্য অবশ্য সিলেটের ফিল্ডার, বিশেষ করে মুশফিককে কৃতিত্ব দিতে পারে কুমিল্লা। সিলেটের এই উইকেটরক্ষক দুটি সহজ ক্যাচের পাশাপাশি সহজতর স্টাম্পিং মিস করেন। সিলেট ফিল্ডারদের এই ভুলগুলোকে কাজে লাগিয়ে মঈন আলী ২১ রান করে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে আউট হয়ে ফিরে যান।
তবে একপ্রান্তে মোসাদ্দেক হোসেন ২৭ রান করে দল জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। এ ছাড়াও রাসেল অপরাজিত থাকেন ১৫ রানে। শেষ দিকে অবশ্য রুবেল দ্রুত দুই উইকেট তুলে লড়াইয়ের আভাস দেন। তবে সিলেটের এই পেসারের ৩৩ রানের বিনিময়ে আদায় করে নেওয়া ৩ উইকেট যথেষ্ট ছিল না।