লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থেকে নিখোঁজ হওয়ার ৩৪ ঘণ্টা পর ৪ কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভাব-অনটন ও কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন ওই চার কিশোরী। তারা বাসা বাড়িতে কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করতে চেয়েছিল।
রোববার রাত ৯টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান। এর আগে সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগার সংলগ্ন রহমান কন্টেকটারের বাড়ি থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।
এসময় পুলিশ সুপার জানান, শনিবার দুপুরে নিখোঁজ কিশোরিদের ঝুমুর এলাকায় কান্না করতে দেখেন ফারুক নামের এক সিএনজি চালক। এক পর্যায়ে ফারুক ওই কিশোরীদের তার পরিচিত পুলিশের নায়েক নুরুল ইসলামের জেলা কারাগার সংলগ্ন বাসায় নিয়ে যান। নুরুল ইসলামের স্ত্রী তার নিকটাত্মীয় রহমানের বাসায় ওই কিশোরীদেরকে রাখেন।
পরে ওই সিএনজি চালকের মাধ্যমে কমলনগর এলাকায় তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নিতে থাকেন। সেই সাথে নায়েক নুরুল ইসলাম ৪ কিশোরী নিখোঁজের খবর কমলনগর থানা অফিসার ইনর্চাজকে অবহিত করলে সে অনুযায়ী তাদেরকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশ সুপার।
তিনি আরও জানান, কিশোরীরা তাদের পরিবারের ঠিকানা দিতে রাজি হয়নি। অভাব-অনটন ও কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয় চার কিশোরী। তারা কাজ করে পরিবারের আর্থিক অভাব অনটন দূর করতে বাবা-মার অগোচরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তারা বাসা বাড়িতে কাজ করে পরিবারকে সাহায্য করতে চেয়েছিল। কারো প্ররোচনায় তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়নি।
প্রেসব্রিফিং শেষে কিশোরীদের তাদের পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) পলাশ কান্তি নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিমতানুর রহমান, ডিএসবির ওসি একেএম আজিজুর রহমান মিয়া ও কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলায়মান হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল ৮টার দিকে কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরবসু এলাকা থেকে কিশোরী সামিয়া আক্তার নিহার শান্তিরহাটে নানার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বের হয়। কিন্তু শনিবার রাত পর্যন্ত সেখানে তারা পৌঁছায়নি। এর আগেই নিখোঁজ হন তারা।
পরে আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে তাদের সন্ধান না পেয়ে রাতেই থানায় সাধারন ডায়েরী করেন নিখোঁজ কিশোরী নিহার নানী আকলিমা বেগম।
নিখোঁজ কিশোরীরা হচ্ছে উপজেলার চরকাদিরার বাদামদতলী এলাকার মো. ইব্রাহিম হোসেনের মেয়ে জোবায়েদা আক্তার, জয়নাল আবেদিনের মেয়ে মিতু আক্তার, সামছুল আলমের মেয়ে সামিয়া আক্তার নিহা ও আবুল খায়ের চন্নুর মেয়ে সিমু আক্তার। তাদের ৪ জনেরই বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। তারা সম্পর্কে খালাতো, জেঠাতো ও চাচাতো বোন।
এর মধ্যে সামিয়া আক্তার নিহা স্থানীয় দক্ষিণ চরকাদিরা সিদ্দিকীয় দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এছাড়া জোবায়েদা আক্তার, মিতু আক্তার একই এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।