লালমাই উপজেলার ৩টি ইউপি নির্বাচনের হালচাল
শান্তনু হাসান খান (বিশেষ প্রতিনিধি)।।
এখন সারাদেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউপি নির্বাচন করতে যাচ্ছে সিইসি-স্থানীয় মাঠ প্রশাসন মাধ্যমে। ব্যাপক সহিংসতা আর অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্যদিয়ে প্রথম দু’ধাপে নির্বাচন সমাপ্ত করেছে সিইসি। তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে সুষ্ঠুভাবে। এতে কুমিল্লার অনেক ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী উঠে আসতে পারেননি। আর পঞ্চম ধাপের নির্বাচন আগামী ৫ জানুয়ারি ২০২২ইং।
এতে নবগঠিত লালমাই উপজেলার প্রথম ইউপি নির্বাচন। এদিকে কুমিলার গাঁ ঘেষে নতুন উপজেলা- লালমাই। এখানে ৯টি ইউনিয়ন। এর মাঝে ৫ জানুয়ারি ৫টির নির্বাচন। বাকী থাকলো ৪টি। ৯নং বাকই ইউপি নির্বাচন চলতি বছরে আর হচ্ছে না। এখানকার চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী নিশ্চিত করেছেন।
তবে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন আগামী নির্বাচনে প্রার্থীতা চাইবেন। পাশাপাশি তার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানও লাইনে আছেন। এখানে দেলোয়ার হোসেনের জনপ্রিয়তাই বেশি। ফলে তার নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট দেওয়া প্রচুর। খোদ মন্ত্রী মহোদয়ের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন তিনি। বাকী ৩টি ইউপি’র মাঝে পেরুল দক্ষিণের চেয়ারম্যান আবুল বাশার।
বাগমারা উত্তরের আবুল কাশেম, দক্ষিণে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মেম্বার। আবুল বাশারকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচিত-আলোচিত। দুর্নীতির পাহাড়স্তুপ জমে আছে তার বিরুদ্ধে। আগমীতে হয়তো নমিনিটেড নাও হতে পারেন। কেননা এক সময় সে জাতীয় পার্টির লোক ছিল। এলাকায় তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ। শালিস বিচার করতে গিয়েও পার্সেন্টেজ ছাড়া তিনি রায় দেন না। অভিযোগ বিস্তর।
তবে ক্লিন ইমেজ নিয়ে দীর্ঘদিন এলাকায় আছেন বাগমারা দক্ষিণের ৯নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় মেম্বার আবু তাহের। দীর্ঘদিন এলাকার জনপ্রতিনিধি হয়ে জনগণের সেবা করেছেন। এবার তিনি পুরোদমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণকে আরো সেবা দিতে চাইছেন। সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল)’র দিক নির্দেশনায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছে লালমাই উপজেলা।
এই লালমাই উপজেলার প্রথম পরিষদের চেয়ারম্যান-প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ আবদুল মালেক। তার পৃষ্ঠপোষকতায় এখানকার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক উন্নয়ন এগিয়ে যাচ্ছে। লালমাই উপজেলার প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে-বাগমারা। এখানে দুটি ইউনিয়ন পাশাপাশি। উত্তরে আবুল কাশেম আর দক্ষিণে লোকমান হোসেন। আগামীতে এ দু’জন প্রার্থীতা চাইবেন নৌকার প্রতীকের জন্য। তবে এবার মাননীয় মন্ত্রীর চিন্তা ভাবনা অন্যরকম।
তিনি পরিচ্ছন্ন নির্বাচন চান। যাতে করে আগামীতে কোন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। আর সেই আলোকে এবার বাগমারার দক্ষিণে মাহবুবুর রহমান মজুমদার (রকেট) আর উত্তরের এমদাদুল হক মজুমদার জনপ্রিয়তার কারণে এগিয়ে থাকলেও আরো নমিনিয়েশন চাইবেন ছাত্রনেতা আয়াতউল্লাহ, আমিনুল ইসলাম সওদাগর। তবে মাননীয় মন্ত্রীর সুদৃষ্টি আছে সবার উপর।
উলেখ করা যেতে পারে যে, আগামী ৫ই জানুয়ারি লালমাই উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৫ম ধাপে। এরপর ৬ষ্ঠ ধাপে নির্বাচন ৩১ জানুয়ারি ২১৯টি ইউনিয়ন। ৭ম ধাপের নির্বাচনে ১৩৮টি এবং তা অনুষ্ঠিত হবে ৭ ফেব্র“য়ারি। এর মাঝে কুমিল্লা বুড়িচং এর ৯টি ও দেবিদ্বার এর ১৫টি ইউনিয়ন অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু জনগণ প্রশ্ন করেছেন লালমাইয়ের বাকী ৩টা কোন তফসিলে নেই। হয়তো অতিগুরুত্ব সহকারে অর্থমন্ত্রী লোটাস কামাল বিষয়টা বিবেচনা করে তফসিল দেয়ার চেষ্টা করবেন। সেটা অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে। এ বিষয়ে এলাকার জনগণের ব্যাপক প্রশ্ন। যদি ৮ম ধাপে নির্বাচন হয়-তাহলে সেটা কবে?
এদিকে বাগমারা উত্তর দক্ষিণ দুটি ইউনিয়ন পরিষদ। এখানে চলতি দায়িত্বে আবুল কাশেম ও লোকমান হোসেন পাশাপাশি দুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। মানুষের ভোগান্তিতে শেষ নেই তাদের এলাকার জনগণের। স¤প্রতিকালে জন্ম নিবন্ধনের সনদ নিয়ে দিনের পর দিন চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের জন্য হন্য হয়ে সাধারণ মানুষরা ঘুরছেন পরিষদ ভবনে। কিন্তু জনগণ চেয়ারম্যানদের সাক্ষাতে বঞ্চিত। আগামীতে তাদের নিয়েও বেশ আলোচনা রয়েছে এলাকাতে। আর নৌকার প্রতীক নিয়ে এবার যারা ৫ তারিখের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তাদের নিয়েও এলাকায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ তীব্র।
বিশেষ করে বেলঘরের আলহাজ্জ আবদুল মালেক (কাঠ মালেক) নৌকা প্রতীক নিয়েও এলাকাতে তীব্র অসন্তোষ দেখা গেছে। ভালো অবস্থানে আছেন সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার। চশমা প্রতীক নিয়ে কবির আহাম্মদ রয়েছেন অনেকের প্রিয় ভাজন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা। এখানে জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার পুনরায় উঠে আসার সম্ভাবনা প্রচুর।
তবে বাগমারা দক্ষিণের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু তাহের বলেন- আমি কোনো প্রফেশনাল চেয়ারম্যান হয়ে – টিআর-কাবিখা’র পেছনে দৌড়াতে চাই না। জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। যদি আমি শেষ অবধি নির্বাচনের মাঠে থাকি। আর সবটাই হবে মাননীয় সাংসদ সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) এর দিক নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য থেকেই। তাঁর সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই আমার।
আয়েশা আক্তার/অননিউজ24