বান্দরবনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয় শিক্ষার্থী কুড়িগ্রামের জয়নবের বাড়িতে শোকের ছায়া। রোববার (২১ জানুয়ারি) সকালে রৌমারী উপজেলার মণ্ডল পাড়ার বাড়িতে তার মরদেহ নিয়ে আসলে পরিবার ও স্থানীয়দের মাঝে শোকের মাতম দেখা যায়।
জয়নব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিদ্যা বিভাগের মাস্টার্স প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ভ্রমণ করা ছিল তার শখ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভ্রমণপিপাসুদের সংগঠন ‘ভ্রমণকন্যা’র সদস্য তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি ট্যুরিস্ট সাইটে কাজ করতেন জয়নব।
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা শহরের মণ্ডলপাড়ার আব্দুল জলিল মিয়ার তিন সন্তানের সবার ছোট জয়নব। অসচ্ছল পরিবারের মেয়ে জয়নব কোনো প্রকার কোচিং, টিউশনি ছাড়াই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করে পড়ার খরচ চালাতেন।
জয়নবের বাবা একজন কাঠ মিস্ত্রি, তিনি মেয়েকে পড়াশুনায় উৎসাহ ও সাহস দিতেন। মেয়ের মৃত্যুর খবরে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এছাড়া মেয়ের মরদেহ দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা জুলেখা বেগম।
শুক্রবার সকালে ৫৮ জন ভ্রমণকন্যার একটি দল ৫টি জিপ গাড়িতে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় যায়। ঘোরাফেরা শেষে শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে বান্দরবানের উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র কেওকারাডাং থেকে বান্দরবান সদরে ফেরার পথে বগালেক-কেওকারাডং সড়কের দার্জিলিং পাড়া এলাকায় তাদের বহন করা একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে।
এতে ঘটনাস্থলে মারা যায় জয়নবসহ দু’জন। এসময় আহত হয় ৮ জন। নিহত জয়নবের মরদেহ রোববার জানাজা শেষে রৌমারী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয় শিহাব খান নামের একজন বলেন, জয়নব খুবই মেধাবী ছিলেন। অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। তার পরিবার তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনার তার মৃত্যুতে তার পরিবার খুবই ভেঙে পড়েছে।
রৌমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ হীল জামান জানান, রৌমারীর মণ্ডলপাড়া এলাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী জয়নবের দাফন করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশ জানান, আমি পরিবারটির খোঁজখবর নিয়েছি। পরবর্তীতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।