শীতের আমেজ বাড়ায় খেজুরের রস। আর এ রস সংগ্রহ করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে ফেনীর সোনাগাজীর গাছিরা।
শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘাস আর ঘণ কুয়াশায় চাঁদর মোড়ানো উপকূলীয় এ গ্রামীণ জনপদ। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে সকালের ঘুম ভেঙ্গে যায়। শীতের সকালে এক গ্লাস খেজুরের রস দিয়ে যায় মনে তৃপ্তি। শীতের আমেজকে যেনো বাড়িয়ে দেয় খেজুরের রস। শীত যত বাড়ে খেজুর রসের মিষ্টিও তত বাড়ে। শীতের মৌসুমে খেজুরের রস দিয়েই গ্রামীণ জনপদ শুরু হয় শীতের আমেজ। শীত বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে গেছে গাছিদের ব্যস্ততা। খেজুরের রস সংগ্রহকারীরা প্রতিদিন বিকেলে নলি, কোমরবন্ধ রশি সাথে নিয়ে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি ও হাড়ি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করেন। কেউ কেউ এই কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন। অনেকেই আবার এই রস দিয়ে রাব তৈরি করেন। শীতের সকালে অনেকেই পৌর শহর সহ উপজেলার বাভিন্ন হাট-বাজারে কিনতে আসেন খেজুরের রস। বিক্রেতার সংখ্যাও কম নয়।
শুক্রবার সকালে খেজুরের রস কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম জানান, খেজুরের রস আমার কাছে খুবই পছন্দের। খেতেও দারুণ, সব বয়সী মানুষ খেজুরের রস পছন্দ করেন। খেজুরের রস দিয়ে শিন্নি, পায়েস, বিন্নি ও রাব দিয়ে জালি পিঠা খেতে পছন্দ করেন পরিবারের সদস্যরা। খেজুরের রস সংগ্রহকারী বাখরিয়া গ্রামের মনির আহমদ বলেন, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে আসছি। এবার প্রথম দিকে খেজুরের রস কম সংগ্রহ হলেও শীত বাড়ার সাথে সাথে খেজুরের রস সংগ্রহ বেড়েছে। কাঁচা খেজুরের রস সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করি। কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে বিক্রি করি। প্রতি কলস রস ৩৫০-৫০০টাকা দরে বিক্রি করে থাকি। জেলা সদর সহ বিভিন্ন জেলার মানুষজন সোনাগাজী এসে রস কিনে নেন। রস সংগ্রহকারী সুজাপুর গ্রামের গাছি মো. কামাল উদ্দিন বলেন, শীতের মৌসুমে রস বিক্রি করে তার সংসার সুখে কাটে। সুস্বাদু এ রস বিক্রি করে কিছু টাকা জমিয়ে পরে খরচ করতে পারেন। শীত বাড়লে রস বেশি পড়ে। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারের শীত মৌসুমে লক্ষাধিক টাকা জমা করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জামাল হোসাইন ভূঁইয়া/ অননিউজ