বৃক্ষরোপণ ও তা পরিচর্যার ওপর ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নম্বর যুক্ত করা হবে। এতে ১০ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখান থেকে শিক্ষকরা ৭৫ আর অভিভাবকরা ২৫ শতাংশ নম্বর দেবেন। শিক্ষার্থীদের বইয়ের পড়া হাতে-কলমে শেখাতে মুজিববর্ষে গাছ রোপণ ও পরিবেশের সংরক্ষণের ওপর জ্ঞান অর্জনে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আয়োজনে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
প্রকল্পের আওতায় গাছ রোপণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ, স্থান নির্বাচন, গাছ নির্বাচন, রোপণের জন্য গর্ত প্রস্তুত, বীজ বা চারা সংগ্রহ, গাছ রোপণ, পরিচর্যার কার্যক্রম ডায়েরিতে লিখতে হবে। বিজ্ঞান বিষয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে ২০ নম্বর আসবে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর। পরিবেশের সংরক্ষণ প্রকল্পভিত্তিক শিখনের ওপর ১০ নম্বর থাকবে। তাতে ৭৫ শতাংশ নম্বর শিক্ষক ও ২৫ শতাংশ অভিভাবক মূল্যায়ন করবেন।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাছ রোপণ ও পরিচর্যায় দক্ষ করে তোলা হবে। গাছের প্রতি ভালোবাসা তৈরি, যোগাযোগ স্থাপন, নিজে চিন্তা করা ও তা বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি, সমস্যা নিরূপণ ও সমাধান, সৃজনশীল দক্ষতা অর্জন করার সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণতায় পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এ প্রকল্প।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে কাজ করা হচ্ছে। বিজ্ঞান ও কৃষি শিক্ষার ধারাবাহিক মূল্যায়নের অংশ হিসেবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা শুধু বই পড়ে শিখছে না, কাজের মাধ্যমে তা প্রয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছে। নিজের সৃজনশীলতা, চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, নিজে সমাধান করার দক্ষতা তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ কর্মসূচির মাধ্যমে বাড়িতে, বাগানে, ছাদে, বারান্দায় বা জানালার উপরে শিক্ষার্থীদের গাছ লাগাতে আগ্রহ তৈরি হবে। কোন গাছ কোথায় রোপণ করা যাবে, কোন সার দিতে হবে, কখন কিভাবে পানি দিতে হবে সে সর্ম্পকে ধারণা তৈরি হবে। শিক্ষক, অভিভাবক ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ ও শেয়ারিং করার সুযোগ বাড়বে। পরিবেশ সম্পর্কে জানতে পারবে। পরিবেশের সমস্যা ও তা মোকাবিলা করতে শিখবে। বইয়ের পড়া কাজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তির উপর জ্ঞান বাড়ছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে জীবনমুখী কার্যক্রম শিখছে। এর মাধ্যমে হাতে-কলমে দক্ষতা তৈরি হচ্ছে। এছাড়া গ্রুপভিত্তিক কাজ, দলপ্রধান হওয়া, শেয়ারভিত্তিক কাজ করার জ্ঞান তৈরি হচ্ছে। শুধু পাঠ্যবই আর ক্লাসভিত্তিক শিক্ষা যথেষ্ট নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুকের সভাপত্বিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মাউশির পরিচালক (প্রশাসন ও কলেজ) অধ্যাপক শাহেদুল খবির, শিক্ষক, শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সাইফ/অননিউজ টুয়েন্টিফোর