প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের মন্দির ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নারীদের হয়রানি করার প্রতিবাদে শনিবার (১০ আগস্ট) রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ মাঠে শহীদ মিনারের সামনে সংখ্যালঘুদের উপর এসব নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের আয়োজন করে রাণীশংকৈলের সকল হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সংগঠন ও সনাতনী শিক্ষার্থী ঐক্য এবং সুশীল সমাজের নাগরিকরা।
বিভিন্ন স্থানে মন্দির, প্রতীমা, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর লুটপাট অগ্নিসংযোগের অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। তারা এই সঙ্কটের দ্রুত সমাধান দাবি করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির, প্রতীমা, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর লুটপাট অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু মা-বোনদের ধর্ষণ করা হয়। দেশত্যাগের হুমকি দেওয়া হয়। বিগত দিনে হওয়া হিন্দু নির্যাতনের কোনও বিচার না হওয়ায় নির্দ্বিধায় এই নারকীয় কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম, প্রতিনিধি ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
এসময় রাণীশংকৈল পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ছবি কান্ত দেব জানান, ‘প্রত্যেকটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর যেভাবে অত্যাচার নিপীড়নসহ মন্দির ভাঙচুর করা হয়, এটার প্রতিবাদ জানানোর জন্যই আমরা আজকে এখানে সবাই একত্রিত হয়েছি। ’
পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাধন কুমার বসাক বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এতে আমরা শঙ্কার মধ্যে আছি। আমরা আশা করবো দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান চাই। ’
ছবি কান্ত দেবের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন রাণীশংকৈলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাকিবুল হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল ফারুক হোসেন, ক্যাপ্টেন মুহতাশিন, হিন্দু- বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রাণ গোবিন্দ সাহা বাচ্চু প্রমুখ।
এসময় রাণীশংকৈলের সকল হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সংগঠন ও সনাতনী শিক্ষার্থী ঐক্য এবং সুশীল সমাজের নাগরিকরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। তাদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে বিভিন্ন দফা অধিকার ও দাবি তুলে ধরা হয়।
এছাড়াও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে কয়েক হাজার’ সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে দেশব্যাপী আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি লক্ষ্য করা হয়। বিভিন্ন এলাকায় লুটপাট ও ডাকাতির মতো ঘটনায় ছাত্রজনতা এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করতে দেখা যায়। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশ পুনরায় নিজ নিজ থানাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24